গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের জন্য ২৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয় এডিবি (এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক)। যার বিপরীতে ২১.১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা পায় দেশটি। এ হিসাবে প্রতিশ্রুত ৭.৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার কথা থাকলেও তা পায়নি বাংলাদেশ।

সোমবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে এডিবির প্রেসিডেন্ট   মাসাতসুগু আসাকাওয়ার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই উঠে আসে এসব তথ্য।

বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারদের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে এডিবির ভূমিকার প্রশংসা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে এডিবি বাংলাদেশের জন্য ২৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই প্রতিশ্রুতির বিপরীতে বাংলাদেশ ২১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে। ইতোমধ্যে ৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রিন্সিপাল হিসেবে পরিশোধ করেছি। এখন এডিবির সাথে আমাদের বকেয়া ঋণ ১৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা সরকারের মোট বৈদেশিক ঋণের প্রায় ২৪ শতাংশ। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ এডিবির অর্থায়নের তৃতীয় বৃহত্তম প্রাপক হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশর অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সক্ষমতা অবহিতকল্পে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে আমাদের উন্নয়ন একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের ‘গ্লোবাল রোল মডেল’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যেখানে ১৯৭২ সালে আমাদের জিডিপি ছিল মাত্র ৬.৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০০৯ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করতে প্রায় ৩৮ বছর সময় লেগেছিল। আর এখন আমাদের জিডিপি ৪৬০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে; বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে। এই হিসাবে, আমরা আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী বছরগুলোতে এডিবি আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশর অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সক্ষমতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এডিবি’র প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে এডিবি শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে।

এডিবি ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহসহ এডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা সফরে রয়েছেন এডিবির প্রেসিডেন্ট। গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ পৌঁছান তিনি। ১৬ মার্চ পর্যন্ত তার ঢাকায় অবস্থানের কথা রয়েছে।

আরএম/এমজে