বাড়ছে না সময়, বাণিজ্য মেলার পর্দা নামছে মঙ্গলবার
নির্ধারিত সময়েই শেষ হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসর। ব্যবসায়ীদের আবেদন সত্ত্বেও এবারের মেলার সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানীর পূর্বাচলে মেলার স্থায়ী ভেন্যু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলা আগামী মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) পর্দা নামছে। আয়োজন সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, ব্যবসায়ীরা সবসময় মেলা বাড়ানোর একটা আবেদন করে থাকেন। যেহেতু নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু হয়েছে তাই সময় বাড়ানো হবে না। কেউ যদি সঠিক সময়ে ব্যবসা শুরু করতে না পারে এটা তাদের ব্যর্থতা। তাই নির্ধারিত সময়েই মেলা শেষ হবে। মঙ্গলবার মেলায় সমাপনী অনুষ্ঠান। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি থাকবেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন > এক ভরি সোনা-এফজেড মোটরসাইকেল ফ্রি, তবু বিক্রি হয়নি কোটি টাকার খাট
প্রত্যাশার চেয়ে মেলায় এবার দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেশি ছিল দাবি করে আয়োজন সংস্থার ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, যদি দর্শনার্থীদের আগমন ও উপস্থিতি বিবেচনা করি তাহলে বলবো এবার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ছিল। গত দুই দিন প্রায় ৩ লাখ করে দর্শনার্থী এসেছেন।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি দর্শনার্থী বেশি থাকলেও তেমন কেনাকাটা করেনি। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেক বেশি কেনাকাটা করবে এটা প্রত্যাশা করাও ঠিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তবে উল্টো কথা জানালেন মেলার প্রবেশপথ বা গেটের ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান আবদুল্লাহ অ্যান্ড সন্স এর স্বত্বাধিকারী স্থানীয় রূপগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবারের মেলায় মোটামুটি দর্শনার্থী ছিল। প্রত্যাশা অনুযায়ী দর্শনার্থী আসেনি।
এদিকে গত দুইদিন সপ্তাহিক ছুটি থাকায় মেলায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। মেলার স্টলগুলোতে বেচাকেনাও হয়েছে বেশ। তবে শেষ সময়ে কিছুটা বেচাবিক্রি হলেও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন মেলায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বিক্রির লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
মেলায় স্টল নেওয়া ক্রোকারিজ দোকানদার জামাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেলার শুরুর দিকে দর্শনার্থী কিছু কম থাকলেও ক্রেতা ছিল না বললেই চলে। শেষ সময়ে বিক্রি হয়েছে। বিশেষ করে গত দুইদিন বিক্রি ভালো হয়েছে। কিন্তু যে আশা করে মেলায় এসেছি তার পূরণ হয়নি। মানুষ কেনাকাটা করেনি। মেলার স্টল দিতে যে টাকা খরচ করেছি তাও পুরোপুরি ওঠেনি। এখন ক্রেতা-দর্শনার্থী আসছে সময় বাড়ালে কিছুটা ব্যবসা হতো। তাই আগামী শনিবার পর্যন্ত মেলা বাড়ানোর সময় চান এ ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী।
গত ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি ঢাকার ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রাঙ্গণ মেলার জন্য জায়গা নির্ধারিত হয়েছে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় ১০টি দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলে। এবার মেলায় প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। মেলার টিকিট অনলাইনে কিনলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও মেলায় প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৭টি প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৩১ টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে।
এসআই/জেডএস