সময় দিল আরও ছয় মাস
শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ ফেরত অনিশ্চিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল বাংলাদেশ। তিন মাসের মধ্যে ফেরতের শর্তে ২০২১ সালে নেয়া এ ঋণ ফেরত দিতে কয়েক দফা সময় চায় শ্রীলঙ্কা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চের মধ্যে এ ঋণ পরিশোধের কথা থাকলেও তা প্রায় অনিশ্চিত। এমতাবস্থায় শ্রীলঙ্কাকে আরও ছয় মাস বাড়িয়ে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক, ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বোর্ড মিটিংয়ে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তা জানান, শ্রীলংকার অবস্থা উন্নতি হচ্ছে তবে তারা ঋণ ফেরত দেয়ার মতো সক্ষম হয়নি তাই চাপ দিয়েও লাভ হবে না। এমন পরিস্থিতিতে ঋণ পরিশোধে জন্য আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সেন্ট্রাল ব্যাংক অব শ্রীলঙ্কার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় কারেন্সি সোয়াপ চুক্তির আওতায় দেশটির অনুকূলে তিন দফায় ২০ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির সরকারের গ্যারান্টি রয়েছে। তিন মাস মেয়াদি কারেন্সি সোয়াপ হলেও চুক্তিতে এক বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। ফলে তিন মাস পরপর এক বছর পর্যন্ত এ ঋণের মেয়াদ এমনিতেই বাড়বে। এ ক্ষেত্রে লন্ডন আন্তঃব্যাংক অফার রেট বা লাইবরের সঙ্গে দেড় শতাংশ সুদ পাবে বাংলাদেশ। আর অর্থ ছাড়ের পর থেকে সুদ ও পরিশোধের সময় হিসাব করা হবে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ৫ কোটি ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্বিতীয় দফায় আরও ১০ কোটি ডলার দেওয়া হয় ওই বছরের ৩০ অক্টোবর। বাকি ৫ কোটি ডলার দেওয়া হয় নভেম্বরে।
শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ সব মিলিয়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। যে অর্থ যেদিন ছাড় হয়েছে, ওই দিন থেকে মেয়াদ হিসাব হবে। ফলে বিদ্যমান চুক্তির আওতায় গত বছরের আগস্ট, অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে সুদসহ অর্থ ফেরত দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঋণ ফেরতে ব্যর্থ হওয়ায় চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিল। এসময়ের মধ্যেও ঋণের টাকা ফেরত দিতে পারবে না শ্রীলঙ্কা। তাই এবার আরোও ছয় মাস সময় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্টে দেশের ইতিহাসে প্রথম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। পরবর্তীতে ডলার সংকট দেখা দেয়ায় ধারাবাহিকভাবে তা কমে ৩২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
এসআই/এমজে