জমেনি বাণিজ্য মেলা, চলছে সাজসজ্জার কাজও
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন হয়েছে রোববার। এটি ঢাকার ২৭তম আয়োজন। মাসব্যাপী এই আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে এসে মেলা প্রাঙ্গণে এখনো বিভিন্ন স্টলের নির্মাণ কাজ চলছে। অল্প সংখ্যক দর্শনার্থী মেলা প্রাঙ্গণে এলেও এখনো জমে উঠেনি এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেলা পুরোদমে জমে উঠতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
সোমবার (২ জানুয়ারি) রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে এসে দেখা গেছে, বিকেলের পর থেকে স্বল্প সংখ্যক দর্শনার্থী এলেও মেলা প্রাঙ্গণ এখনো জমে ওঠেনি। বেশিরভাগ স্টলগুলোর ডেকোরেশন কাজ হয়ে গেলেও এখনো কিছু কিছু স্টল, প্যাভিলিয়নের নির্মাণ বা ডেকোরেশনের কাজ চলমান রয়েছে। সাজসজ্জার কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। পাশাপাশি যেই স্টল বা প্যাভিলিয়নগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেছে, সেগুলোতে অল্প সংখ্যক ক্রেতা সাধারণ ঘুরে ঘুরে দেখছেন, দর-দাম সম্পর্কে জানছেন।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, মেলা প্রাঙ্গণের বাহিরে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রবেশ টিকিট কাউন্টারগুলোর বেশিরভাগই ফাঁকা। মেলায় প্রবেশের ফটকগুলোতে দায়িত্বরতরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। তবে, মেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে নির্দিষ্ট শিশু কর্নারে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি দেখা গেছে দর্শনার্থীদের। উন্মুক্ত স্থানে এই শিশু কর্নারে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইড রাখা আছে যা ব্যবহার করতেই মূলত সেখানে শিশুসহ অভিভাবকদের ভিড় দেখা গেছে।
বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে কিচেন সামগ্রীর একটি নির্মাণাধীন স্টলের দায়িত্বরত শিহাবুল ইসলাম বলেন, আজকের মধ্যেই আমাদের স্টল নির্মাণ, ডেকোরেশনের কাজ হয়ে যাবে। অনেক স্টলই এখনো পরিপূর্ণভাবে তাদের সাজসজ্জার কাজ শেষ করতে পারেনি। এছাড়া দর্শনার্থীরাও সেভাবে আসতে শুরু করেনি। আশা করা যাচ্ছে আর দুই চার দিনের মধ্যে পুরোদমে দর্শনার্থীরা আসবেন।
অন্যদিকে, ইন্ডিয়ান অ্যালুমিনিয়াম নামক একটি স্টলের দায়িত্ব পালনকারী কাস্টমার ম্যানেজার কল্যাণ কুমার দাস বলেন, মেলা এখনো জমেনি তবে, কিছু ক্রেতা, দর্শনার্থী আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু বিক্রি এখনো সেভাবে শুরু হয়নি। প্রতিটি স্টলেই একই অবস্থা। আমরা নিজেরাও এখনো সবকিছু গুছিয়ে নিতে পারিনি। প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এমনিতেও ক্রেতা দর্শনার্থী একটু কম আসে। ৪/৫ দিন পর থেকে হয়তবা দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
রাজধানীর মালিবাগ থেকে পরিবারের সদস্য সহ আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে এসেছেন আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, বাচ্চাদের বায়নার কারণে আজ মেলায় এসেছি। ঢাকা থেকে দূরে এই মেলায় আসা একটু কষ্টেরই। প্রথমে বাসে অপেক্ষা করতে হলো যাত্রী পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য। এরপর মেলায় এসে দেখছি এখনো সেভাবে অনেকগুলো স্টল, প্যাভিলিয়ন ডেকোরেশনের কাজ চলছেই। পূর্ণ মাত্রায় এখনো মেলা শুরু হয়নি, মানুষের উপস্থিতি অনেক কম। তবে কিছুদিন গেলে হয়তবা মেলা জমে উঠবে।
রোববার (১ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি ঢাকার ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগে বাণিজ্য মেলা শেরে বাংলা নগরের চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। ২০২২ সাল থেকে মেলার জন্য জায়গা নির্ধারিত হয়েছে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার।
এবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ১০টি দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এবার মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। মেলার টিকিট অনলাইনে ক্রয় করলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ থাকবে। এছাড়াও মেলায় প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৭টি প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে।
এএসএস/এমএ