সুশাসনের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে ক্রমান্বয়ে বিরাট অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। 

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে ‘খসড়া সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) : পরিচ্ছন্ন জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে কি?’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। 

অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, অন্যান্য বড় লক্ষ্যমাত্রার মতোই ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি করা একটি অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী টার্গেট। লক্ষ্যমাত্রাটা একটা স্লোগানের মতো। কপ-২৬ এর আগে বিভিন্ন দেশ ঘোষণা করেছিল নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রার কথা, সেটার তালেই কি আমরা বলেছি? নাকি বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছি, সেটা ভাবনার বিষয়। আমাদের এখন পর্যন্ত যে অর্জন ২০৪০ সালে সেই লক্ষ্যমাত্রায় আমরা যেতে পারবো কী? তবে একটি কথা আছে এখানে প্রযুক্তি ও অর্থায়নের প্রয়োজন আছে। সেটা থাকলে আমরা ত্বরান্বিত করতে পারবো।

তিনি বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনকে মাথায় রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছি। সেখানে যে ধরনের প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে সেগুলো অনেক দেশ বাদ দিয়ে দিচ্ছে। কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ, অনেকে এটা এখন আর ব্যবহার করছে না। এটা বর্জন করছে। এটা ব্যবহারে প্রচুর অর্থের ও জায়গার প্রয়োজন পড়ে। সেখানে যে বিনিয়োগ হয় সেটা কস্ট ইফেক্টিভ হয় না। আমরা যেটা উৎপাদন করবো সেটা কস্ট ইফেক্টিভ না হলে সেটা করবো না। যেটা বর্জন হয়ে আছে উন্নত দেশে সেগুলো আমরা করবো না।

সুশাসনের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও গ্রিডে দিতে পারছি না জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে পৌঁছে দিতে পারছি না। অন্যদিকে ক্রমান্বয়ে বিরাট অঙ্কের ভর্তুকি দিচ্ছি। যাদের ভর্তুকির দরকার নেই, কিন্তু সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যেও বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। 

আইইপিএমপি প্রসঙ্গে ফাহমিদা বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এমন একটা খাত, এখানে অনেকেরই স্বার্থ রয়েছে। এই স্বার্থটা দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কৌশলগত উপাদান, বাইরের স্বার্থকে পেছনে ফেলের দেশের স্বার্থটা কী হবে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় জ্বালানি খাতে আমরা পিছিয়ে আছি। আইইপিএমপি-এ নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়টি উপেক্ষিত হয়নি, তবে অবহেলিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তন যেভাবে চিন্তা করা দরকার সেটা পর্যাপ্ত হয়নি। ডকুমেন্টটি এখন পর্যন্ত যেভাবে রয়েছে প্রকারান্তরে তা এলএনজিকে উৎসাহিত করছে। ক্ষেত্র বিশেষ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেও উৎসাহিত করছে।

আরএম/জেডএস