মেজর (অব.) আবদুল মান্নান/ ছবি : সংগৃহীত

প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেডের (বিআইএফসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করন। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর মামলার অনুমোদন দিয়েছিল দুদক। 

দুদক উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার আসামিরা হলেন, বিআইএফসি পরিচালক আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, এএমএম জাহাঙ্গীর আলম, রইস উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন আহমেদ ও মিসেস রোকেয়া ফেরদৌস, প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ মালিক, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুর রহমান, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ফকরে ফয়সাল, সাবেক এভিপি আহমেদ করিম চৌধুরী ও সাবেক সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন এবং মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আমিনুর রহমান খান।

আরও পড়ুন : অর্থ আত্মসাতের আরও এক মামলায় আসামি মেজর মান্নান

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মেজর (অব.) এম এ মান্নান সাবেক চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে অন্যান্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রতারণামূলকভাবে মেসার্স টেলিকম সার্ভিসেস লিমিটেডের মালিক মো. আমিনুর রহমানের নামে নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়াই ৮ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ করেন। যা সুদ ও আসলসহ গ্রাহকের নিকট পাওনা ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ৭০৫ টাকা।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা জামানত হিসেবে চেক কিংবা অন্য কোনো সম্পদ মর্টগেজ নেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের আবেদনকারীর সিআইবি রিপোর্টও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা হয়নি। 

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায়  মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন : ২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ফাঁসছেন মেজর মান্নানসহ ১০

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর বিআইএফসি থেকে প্রায় ২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মেজর (অব.) আবদুল মান্নানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করে দুদক। সিরাজুল ইসলামকে মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক দেখিয়ে নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়াই ১১ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে গ্রাহকের ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ৯ হাজার ১২৩ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল ওই মামলায়। সিরাজুল বাদে সবাই আজকের মামলায়ও আসামি। 

ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি সিরাজুল ইসলাম অপর আসামি আহমেদ করিম চৌধুরীর ভাই, যিনি বিআইএফসির এভিপি অ্যান্ড ইউনিট হেড। ঋণগ্রহীতা আসামি সিরাজুল ইসলাম মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের প্রতিষ্ঠান সানম্যান গ্রুপের ডিজিএম। অপর আসামি কোম্পানিটির পরিচালক রইস উদ্দিন মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের শ্যালক এবং পরিচালক উম্মে কুলসুম মান্নানের (মেজর মান্নানের স্ত্রী) ভাই ।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে এর আগেও দুটি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মামলাগুলোতে ১৪ কোটি ৩০ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ও ২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

আরএম/এসকেডি