শাকসবজির চড়া দাম কমছেই না। গ্রামে শীতের আমেজে কম দামে হরেক রকম সবজি মিললেও শহরে তার প্রভাব একদমই নেই। ঢাকার বাজারে নতুন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি ও শিম এলেও তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। 

এদিকে গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরের শসা এখন বিক্রি হচ্ছে  ১০০ টাকায়। অপরদিকে মৌসুম শেষ হওয়াতে ৪০ টাকা কেজি দরের কাঁকরোলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকায়। তবে কয়েকটি সবজির দাম কমলেও তা কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে।  ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের হিসাব কষে কিনতে হচ্ছে শাকসবজি। 

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কমলাপুর, ফকিরাপুল ও মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম গাজর ও টমেটোর। গাজর ১৪০ টাকা কেজি দরে এবং পাকা টমেটো ১২০ টাকা ও 
কাঁচা টমেটো মান ভেদে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে সবচেয়ে কম দাম ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। 

এছাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরের ফুলকপির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকায়, ৪০ টাকা দরের লাউ এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে 
দেখা গেছে। এদিকে দাম কমেছে বেগুন ও শিমের। ১২০ টাকা থেকে কমে শিম এখন ৮০ টাকায় ও ৮০ টাকা থেকে কমে বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই মান ভেদে ৫০ টাকা কেজি দরে মূলা, ৬০ টাকা কেজি দরে ঢেড়স,  ৮০ টাকা কেজি দরে বরবটি এবং ৫০ থেকে ৬০ কেজি দরে পটল বিক্রি হচ্ছে। 

এছাড়া কলমি শাক ১০ টাকা, মূলা শাক ২০ টাকা, লাউ শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, পাটশাক ২০ টাকা,  লাল শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ৫০ টাকা,  ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ৩০ টাকা থেকে লাউশাকের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকায়।   

মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজারে কথা হয় অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মাদ উল্লাহর সাথে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। পেনশনের টাকাই এখন শেষ ভরসা। বাজারে শাক-সবজির দাম বাড়লেও আমি বা আমাদের আয় তো বাড়ছে না। যে লাউশাক ৩০ টাকায় কিনেছি, তা এখন ৫০ টাকা। শেষ বয়সে এসে দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে।

কমলাপুর কাঁচাবাজারে আসা অ্যাডভোকেট আব্দুল ওহাবের সাথে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কী কিনবো, কী কিনবো না এই ভেবেই দ্বিধায় আছি। চাহিদা থাকার পরও সব জিনিস কিনতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে চাহিদা সীমিত করতে হচ্ছে। 

বাজার করতে আসা ফোরকান মিয়া বলেন, ৭০-৮০ টাকার নিচে কিছুই কিনতে পারছি না। আমি দিন আনি দিন খাই। দুই কেজি সবজি কিনতে যদি সারাদিনের উপার্জন চলে যায় তাহলে চাল, ডাল, তেল কিভাবে কিনবো?

এদিকে সবজি বিক্রেতা সোহাগ ও ফিরোজসহ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা বলছেন গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সবজির দামে প্রভাব পড়েছে। চাহিদা থাকার পরও গ্রাম থেকে পর্যাপ্ত সবজি আসছে না। বাজারে মালের সংকট থাকায় দাম বেড়েছে। ১০ থেকে ১৫ দিনের মাঝেই শাক-সবজির দাম হাতের নাগালে আসবে বলে মনে করছেন তারা।

এমএম/এনএফ