আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের দেওয়া নানা সংস্কার প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, আমরা আইএমএফ দ্বারা পরিচালিত নই। তাদের সব কথা আমরা গিলব না, প্রয়োজন নেই। তারা (আইএমএফ) তাদের কাজ করে যাবে। আমরা আমাদের কাজ করব।

বুধবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মাঠে যুবমেলা-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এই মেলার আয়োজন করেছে।

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল উপস্থিত ছিলেন। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আইএমএফ হোক, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক হোক, খবরের কাগজে ভর্তি খবর- তারা এটা বলছে, তারা ওটা বলছে। এটা করতে হবে, ওইটা করতে হবে। আমাদের এগুলো পড়ে রেখে দিতে হবে। রেখে দিয়ে কাজে মনযোগী হতে হবে। অন্যের কথা শোনা ভালো, কাজ করতে হবে নিজের বিদ্যা-বুদ্ধিতে। আমরা আইএফ দ্বারা পরিচালিত নই, বিশ্বব্যাংক দ্বারা পরিচালিত নই। আমরা অন্য কোনো রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত নই।’

তিনি বলেন, ‘আইএমএফও যে কথা বলে না, বিশ্বব্যাংকও যে কথা বলে না, একটি মহল সাজিয়ে গুছিয়ে সেই কথায় আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ছড়ায়। অনুগ্রহ করে এগুলো গিলবেন না। আমি গিলবো না, প্রয়োজন নেই। তারা তাদের কাজ করবে। তাদের কাজ করে যাবে। আমরা আমাদের কাজ করব।

তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ নেওয়া নতুন কিছু নয়। আমরা অতীতেও ঋণ নিয়েছি। সব রাষ্ট্রই ঋণ নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ঋণ নেয়। সৌদি আরবও ঋণ নেয়। সুতরাং ঋণ নেওয়া, ঋণ ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের পরিষ্কার রেকর্ড আছে। আমরা ঋণ নিয়ে যথাযথ কাজে লাগিয়ে, প্রশিক্ষণ বা উন্নয়নের কাজে লাগাব। আমরা ঋণ নিয়ে এসে চা সিগারেট খেয়ে ফুরিয়ে দেব না, আড্ডাবাজি করব না। আমরা দেশের উন্নয়নে তা কাজে লাগাব।’

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আবার বলব ভয় পাওয়ার কোনো বিষয় নয়। একটি সময় যাচ্ছে খারাপ, সব দেশের জন্য। এর মধ্যেও আমাদের উৎপাদন... অনেক অনেক দেশের তুলনায় ভালো এখন। তবে হ্যাঁ টানাটানি আছে, অস্বীকার করা বোকামি হবে। এই মুহূর্তে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। মূল্যস্ফীতি দমিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে। বাহুল্য বর্জন করতে হবে।’

জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অনেক চাপ দিয়েছি, সরকারের ভেতরের অনেক খরচ নিয়ন্ত্রণ করেছি, করছি। আমাদের মন্ত্রীদের কিংবা সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিদেশে চলাফেরা অনেক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। গাড়ি-ঘোড়া, ঘর-বাড়ি আসবাবপত্র প্রতিটি বিষয়ের ওপর আমরা পরিকল্পনা কমিশন এখন নজরদারি করছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের খরচ কমাতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আপনাদের কাছে খরচ কমানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

২ নভেম্বর শুরু হওয়া সাত দিনের এই মেলা শেষ হবে ৮ নভেম্বর। মেলায় ১০২টি স্টল রয়েছে, যেখানে হস্তশিল্পসহ নানা ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।

এমআই/আরএইচ