বাংলাদেশে তৈ‌রি আ‌রও এক‌টি পণ্যবাহী কনটেইনার জাহাজ যুক্তরাজ্যে রপ্তা‌নি করা হ‌য়েছে। দে‌শীয় প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ডের তৈ‌রি করা ৬ হাজার ১০০ টন ধারণক্ষমতার জাহাজ‌টি কি‌নে‌ছে যুক্তরাজ্যের এনজিয়ান শিপিং কোম্পানি লি‌মি‌টেড। জাহাজ‌টি রপ্তা‌নি ক‌রে ১০০ কো‌টি টাকার বে‌শি বৈ‌দে‌শিক মুদ্রা আয় ক‌রে‌ছে বাংলা‌দেশ।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজ‌টি হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছি‌লেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে জানা‌নো হয়, জাহাজটির ৩৬৪ ফুট লম্বা, প্রস্থে ৫৪ ফুট ও গভীরতা ২৭ ফুট। জাহাজটির ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৪১৩০ হর্স পাওয়ার, গতি ১২.৫ নটিক্যাল মাইল ও ধারণক্ষমতা ৬১০০ টন। এটি কনটেইনার, ভারী স্টিলের কয়েল, খাদ্যশস্য, কাঠ, পাশাপাশি বিপজ্জনক মালামাল বহন করতে পারবে। সমুদ্রে সম্পূর্ণ বরফ আচ্ছাদিত অবস্থায় ৪ ফুট বরফের পানিতে চলতে পারবে জাহাজটি।

আরও পড়ুন : পুঁজিবাজার সবজি-মাছের বাজার নয়

নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস কন্টেইনার শিপ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করল। এটা আমাদের গর্বের দিন। এ‌ মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আ‌য়ে বড় ভূমিকা রাখবে।

‌তি‌নি বলেন, জাহাজ নির্মাণ শিল্প এক‌টি সম্ভাবনাময় রপ্তা‌নি খাত। অত্যাধুনিক জাহাজ নির্মাণে আমা‌দের দক্ষতা র‌য়ে‌ছে। আমারা প্রত্যাশা কর‌ছি ভবিষ্যতে এ শিল্প‌টি তৈরি পোশাক শিল্পের কাছাকাছি রপ্তা‌নি আয় অর্জন কর‌তে পার‌বে। 

প্রতিমন্ত্রী ব‌লেন, সমুদ্র সীমা জয় করলেও আমরা সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে পারিনি। এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। সম্ভাবনাময় এ খা‌ত এগিয়ে নেওয়া জরু‌রি। সরকার এ‌টি‌কে গুরুত্ব দি‌য়ে নানা পদক্ষেপ নি‌চ্ছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, মাতারবাড়ী, মোংলা, পায়রাসহ সব বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ বারী বলেন, আনন্দ শিপইয়ার্ড ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সোনারগাঁওয়ের মেঘনাঘাটে আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ নির্মাণ করছে। ইয়ার্ডের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩০ হাজার টন।  

তিনি বলেন, জাহাজ নির্মাণে সর্বাধিক মানব শক্তির ব্যবহার হয়। আমাদের আছে ভালো আবহাওয়া, নদী, সমুদ্র উপকূল, বৃহৎ সমুদ্র এলাকা, তাই এই শিল্প বাংলাদেশের জন্য একটি আশীর্বাদ। জাহাজ রপ্তানি, জাহাজ পরিচালনা, ক্যাপ্টেন ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, ক্রু সরবরাহ, দেশের শিপিং লাইনের জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্র পরিবহন এবং দেশের উপকূলীয় এবং আভ্যন্তরীণ মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্প বাংলাদেশকে বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা যোগান দিয়ে থাকে। এই অংক ২০৪১ সালে ১০০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছি‌লেন আনন্দ শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা বারী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি) হোসেন আহমেদ, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কম‌ডোর নিজামুল হক, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মনিরুল মওলা প্রমুখ।

এসআই/এসকেডি