ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারা পরিচালক হতে পারবেন তা নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে কাউকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিযুক্ত বা পদ থেকে অব্যাহতি অপসারণ করতে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে।

পাশাপাশি কোনো জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা পরিচালক হিসেবে অযোগ্য হবেন। এছাড়া এ পদে কোনো ব্যক্তি ৩ মেয়াদের বেশি থাকতে পারবেন না।

সোমবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক নিয়োগ প্রসঙ্গে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর উদ্দেশ্য পূরণ করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিয়োগের যোগ্যতা ও উপযুক্ততার শর্তাবলী পূরণ ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। 

পরিচালক নির্বাচনে লাগবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন

পরিচালক নির্বাচন বা মনোনয়নের পর নিযুক্তি বা পদায়ন বা পুনঃনিযুক্তি বা পুনঃপদায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। বিপরীত দিকে, নিযুক্ত বা পুনঃনিযুক্ত বা পদায়ন করা পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া, বরখাস্ত করা বা অপসারণ করা যাবে না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের যোগ্যতা

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিধান অনুযায়ী ন্যূনতম শেয়ার ধারণ করতে হবে, অন্যূন ১০ (দশ) বছরের ব্যবস্থাপনা বা ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তিনি বা তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি নয় এমন ব্যক্তি হতে হবে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে নিযুক্তির অযোগ্যতা

মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনয়ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়া কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে দেওয়ানি বা ফৌজদারি আদালতের রায়ে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকা, মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনয়ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকারের কোনো সংস্থার তদন্ত বা পরিদর্শন প্রতিবেদনে জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে কোন পর্যবেক্ষণ থাকা, মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনয়ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যদি আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধিমালা, প্রবিধান বা নিয়মাচার লঙ্ঘনের কারণে দণ্ডিত হন, কোনো ব্যক্তি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকা অবস্থায় তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যার কোন পৃথক সত্তা নেই তার পক্ষে আর কোন পরিচালক উক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে নিযুক্ত হতে পারবেন না।

আরও পড়ুন : বেতন-ভাতার নামে বিদেশিকর্মীরা কত অর্থ নিয়ে যাচ্ছেন?

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বহিঃহিসাব নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক, বেতনভুক্ত কর্মচারী বা অন্য কোনো পদের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন কিংবা বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে নিয়োজিত ছিলেন এরূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে নিযুক্ত হতে পারবেন না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদের মেয়াদ হবে অনধিক ৩ বছর এবং কোন পরিচালক একাদিক্রমে ৩ মেয়াদের বেশি পরিচালক পদে থাকতে পারবেন না। তবে ৩ মেয়াদে পরিচালক পদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি পরিচালক পদে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ হাইকোর্ট কর্তৃক পুনর্গঠিত হওয়ায় এসব নির্দেশনা তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১৮(ছ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এসআই/এসকেডি