একটি কলার দাম ১৫ টাকা
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। প্রতিদিনই বাড়ছে কিছু না কিছুর দাম। এই তালিকায় এবার নতুন করে যোগ হয়েছে পুষ্টিকর ফল কলা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি কলায় দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ট্রাকের ভাড়া বেড়েছে। এতে করে কলা পরিবহনের খরচও বেড়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রকারভেদে এক হালি সাগর কলার দাম ৩৫ থেকে ৫০ টাকায়। তবে টং দোকানগুলোতে এক পিস সাগর কলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।
খুচরা বাজারে সাগর কলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সবরি কলার দাম। সবরি কলার হালি বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকা।
বেড়েছে চম্পা কলার দামও। এই জাতের কলা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা হালিতে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাংলা কলা। এক সপ্তাহ আগে এই দুই জাতের কলা বিক্রি হয়েছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা হালিতে। এদিকে হালিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে রোববার কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।
তিন বছর ধরে রাজধানীর মহাখালীতে কলার ব্যবসা করছেন আবুল কাশেম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে কারওয়ান বাজার থেকে বাড়তি দামে কলা কিনতে হচ্ছে। তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল মাজেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর, ফরিদপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে রাজধানীতে কলা আসে। এখন পরিবহন খরচ বেড়েছে। এ কারণে কলার দামও বেড়েছে।
গুলশান এলাকার টং দোকানদার রঞ্জু মিয়া। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দোকানে ছোট কলা খুব কম চলে। এজন্য বড় কলা আনতে হয়। কিন্তু এখন বড় কলার দাম বেড়ে গেছে। এক পিস কলা ১০ টাকা করে কিনে ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। এই দামের নিচে বিক্রি করলে আমাদের পোষায় না।
কোকাকোলা বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কলার উৎপাদন ঠিক আছে। কিন্তু সার ও পরিবহনের খরচ বেড়ে গেছে। তাই খুচরা ও পাইকারি বাজারে কলার দামও বেড়েছে।
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক জরিপে দেখানো হয়েছে, করোনার পর দেশে চরম দারিদ্র্যতার হার আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেড়ে গেছে। ১৪ শতাংশ মানুষের ঘরে কোনো খাবার নেই। তাদের মধ্যে দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, রিকশাচালকেরও একটি বড় অংশ রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই খুদা নিবারণের জন্য রুটি কলা খেয়ে থাকেন। কিন্তু কলার দাম বাড়ায় এখন তারা সেই খাবারও খেতে পারছেন না।
এমআই/এমএইচএস