পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার লিমিট) গণনার পদ্ধতি ‘ক্রয়মূল্যে’ করার বিষয়ে মত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ বিষয়ে মতামত দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দীর্ঘ এক যুগ ধরে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের চলতি বাজারমূল্য, নাকি ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে গণনা হবে এ নিয়ে বিতর্ক চলছে। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর থেকেই এ বিতর্ক শুরু হয়। বর্তমানে বাজারমূল্যের ভিত্তিতে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা হিসাব করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এটাই চায়। 

তবে দেশের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা সবসময় ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে এ বিনিয়োগসীমা হিসাবের করার পক্ষে মতামত দিয়ে আসছেন।

বিভিন্ন মহলের বিতর্কের মধ্যে গত ১৭ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মতামত চেয়ে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২ আগস্ট মতামত দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

চিঠিতে বলা হয়, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ এর ২৬ (ক) ধারায় ব্যাংক কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের হিসাবায়নে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা (এক্সপোজার লিমিট) নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ক্রয় করা মূল্যকেই বাজারমূল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।’ অর্থাৎ বাজারমূল্য নয় ক্রয়মূল্যের পক্ষে মতামত দিল মন্ত্রণালয়।  

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারমূল্যে বিনিয়োগসীমা গণনা হয় বলে ব্যাংকগুলো দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে না। কারণ বাজারমূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগসীমা গণনা হলে শেয়ারের দাম বেড়ে গেলেই তা বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় ব্যাংকগুলো। তবে কেনার পর শেয়ারের দাম কমে গেলে হিসাব করা হয় ক্রয়মূল্যে।

বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি ব্যাংকগুলোর দিক থেকে পুঁজিবাজারে বাড়তি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরির পথে অন্যতম বাধা। তবে ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে গণনা করলে শেয়ারের দাম বেড়ে গেলেও তা বিক্রি করতে বাধ্য হতে হবে না ব্যাংকগুলোকে।

এসআই/এসকেডি