এমারেল্ড অয়েল বাজারে আনল রাইস ব্র্যান অয়েল ‘স্পন্দন’
দেশের বাজারে যাত্রা শুরু করেছে রাইস ব্র্যান অয়েল ‘স্পন্দন’। এটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্যখাতের কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের একটি পণ্য। মঙ্গলবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েলের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ও মিনোরি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিয়া মামুন, ল্যাবএইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল খাদ্যতত্ত্ববিদ ডা. নুসরাত জাহান দীপা, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক বিভাগের ডা. মো. লোকমান হোসেন প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ছয় বন্ধ থাকার পর চলতি বছর জানুয়ারি মাসে শেরপুরে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে রাইস ব্র্যানের উৎপাদন শুরু করে কোম্পানিটি। সম্প্রতি জাপানি বিনিয়োগে পরিচালিত মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েল বাজারজাত করতে যাচ্ছে। দেশের বাজারের পাশাপাশি ভারত ও জাপানে এই তেল রপ্তানি করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি আন্তরিকতায় এ বছর আমরা উৎপাদন শুরু করেছি। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং তিতাস গ্যাস আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে দিলে দেশে চলমান ভোজ্যতেলের সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে এমারেল্ড অয়েল।
এমডি বলেন, এমারেল্ড অয়েলের দুটি প্রোডাকশন ইউনিট আছে। এর একটির ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করার ক্ষমতা ১৮০ টন, অপরটির ক্ষমতা ১৫০ টন। ইউনিট দুটির দৈনিক মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩০ টন। গ্যাসের অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে শুধু ১৮০ টনের ইউনিটটি সচল আছে। এই ইউনিটে ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করে ৩৫ টনের মতো অপরিশোধিত তেল পাওয়া যায়। এখান থেকে দৈনিক পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় প্রায় ২৬ টন। এ সক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন প্রায় ২৬ টন তেল বাজারজাত করতে পারব।
আফজাল হোসেন বলেন, উৎপাদন শুরুর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে আমরা ব্রেক ইভেনে চলে আসছি। দিনের পুরো সময় গ্যাস সরবরাহ পেলে আমরা পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব। এমন সহায়তা পেলে আশা করছি, দ্রুত শেয়ারহোল্ডারদের ভালো ডিভিডেন্ড দিতে পারব।
এমারেল্ড এমডি বলেন, উৎপাদন শুরুর পর আমাদের দুটি বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রথমটি হলো গ্যাস সংকট। দ্বিতীয়টি ব্যাংক লোন পুনঃতফসিল। কোম্পানিটি যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিতাস গ্যাসের বকেয়া ছিল ৩২ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০২১ সালে তিতাস গ্যাস লাইনচার্জসহ ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বকেয়া বিলের একটি স্টেটমেন্ট দেয়। এ টাকার পুরোটাই শোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অতীতে রেকর্ডকৃত এই কোম্পানির লাভ বা ক্ষতি যাই হোক না কেন, আমাদের বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য এটিকে একটি লাভজনক কোম্পানিতে পরিণত করা এবং বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করা। কোম্পানি পরিবর্তন হলেও আগের ব্র্যান্ড স্পন্দন নামেই তেল বাজারজাত করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিনোরি বাংলাদেশ নামে জাপানি একটি কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনে মালিকানায় আসে।
এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০১১ সালে স্পন্দন-ব্র্যান্ডেড রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন শুরু করে। ২০১৪ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে।
লোকসান এবং কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করার কারণে কোম্পানিটির শেয়ার ২০১৮ সাল থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে লেনদেন করা হচ্ছিল। ২০১৬ সালে এমারেল্ড অয়েল ১৮ দশমিক ২ কোটি টাকা লাভ করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়।
এমআই/এসকেডি