দেশের বাইরে টাকা পাচার হয়, এটি অস্বীকারের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, যে টাকাগুলো পাচার হয়, আমরা সেগুলো নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমেরিকাসহ ১৭টি দেশ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে টাকা ফেরত নিয়ে এসেছে। আমরাও সেই কাজটি করতে যাচ্ছি।

শুক্রবার (১০ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে আপনারা বাঁধা দিয়েন না। এই টাকা ফেরত আনতে না পারলে তো কোনো লাভ নেই।

টাকা পাচার হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকার একটি ধর্ম আছে। টাকা যেখানে সুখ আর বিলাসিতা পায় এবং যেখানে রিটার্ন বেশি, সেখানেই চলে যায়। টাকা কিন্তু এখন কেউ সুটকেসে করে পাচার করে না। সহজেই ডিজিটাল সিস্টেমে টুলস ব্যবহার করে পাচার করে।

‘টাকা পাচার আসলে বিভিন্ন কারণে হয়ে যায়। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া সেগুলো বলা যায় না। পাচার নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে। সেগুলোর সত্যতা পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেই। এখনও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। এমনকি তাদের অনেকেই জেলে আছেন।

তিনি আরও বলেন, মিডিয়াতে পাচার নিয়ে একটি রিপোর্ট হলেই তাকে ধরে ফেলা যায় না বা আমরা বিচার কাজ হাতে নিতে পারি না। আমাদের নিজস্ব সিস্টেম আছে। আমরা জানি সুইজারল্যান্ডে টাকা আছে। কিন্তু সেটা বললেই তো আর বিচার কাজ শুরু করে দিতে পারি না। পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত নিয়েই কাজ করতে হয়। ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মাধ্যমেই আমাদের অ্যাকশনে যেতে হয়।

করণীয় প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবসময় ধর্মের কাছেই ফিরে আসতে হবে। ধর্মের কথা শুনে যদি মানুষ একটু নরম হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) স্পষ্ট করে বলেছেন, যে ঘুষ দেয় আর নেয়, দুজনের জায়গাই জাহান্নামে। আমরা জাহান্নামে যাওয়ার কাজ না করি।

এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, পাচার করা টাকা বলতে আমরা বলি বিদেশে অর্জিত আয়। টাকা পাচাররোধে আমাদের আইন আছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এটি নিয়ে কাজ করে। এটি তাদের প্রতিদিনের কাজ। টাকা কীভাবে পাচার হয়, কারা করে, সেই সব তথ্য-উপাত্ত তারা সংগ্রহ করে।

তিনি বলেন, মিডিয়াতে যখন বলা হয় বিদেশি ব্যাংকে এতো এতো টাকা পাচার হয়েছে, সেগুলো তো দেখা যায় শতকরা ৯৫ শতাংশই বিদেশের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষ পাঠায়। অথবা ব্যাংকে সেগুলো অপরিশোধিত আছে, ব্যাংকের সেটেলমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু ওগুলো বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গিয়ে সুইস ব্যাংকে রাখা হচ্ছে, এমন কোন প্রমাণ আমরা পাইনি।

টিআই/এমএইচএস