থাকছে না পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ
প্রত্যাশা অনুযায়ী অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা সাদা) বিনিয়োগ না করায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে না।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন।
বিজ্ঞাপন
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা কর দিয়ে সাদা করার সুযোগও বাতিলের প্রস্তাব করছি।
সরকার গত বছর পুঁজিবাজারে এক বছর বিনিয়োগ রাখার শর্তে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রেখেছিল। একইসঙ্গে এই নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল, যারা অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা বৈধ করে নেবে, তাদের কাছে অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো কর্তৃপক্ষই জানতে চাইবে না।
এছাড়া অর্থ সাদা করার জন্য কর ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। এর বাইরে ২৫ শতাংশ প্রদেয় করের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ জরিমানা কর আরোপ করা হয়েছিল।
এর আগে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য– ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’।
জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি।
চলতি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এবারের প্রস্তাবিত বাজেট দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ঘাটতির দিক থেকেও নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।
এমআই/এমএইচএস