সাংবাদিকদের তোপের মুখে সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান
ভোজ্যতেল নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েছেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান। প্রতিষ্ঠানটি তীর ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল বাজারে সরবরাহ করে।
সোমবার (৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক তেল নিয়ে প্রশ্ন করেন। ওই সাংবাদিক বলেন, ঈদের দুদিন আগে থেকে মার্কেট থেকে তেল গায়েব হয়ে গেল। বাজারে গিয়ে ভোক্তারা তেল পেলেন না। এরপর কী ঘটনা ঘটে গেল যে বাজারে আবার তেল চলে আসল? ভোক্তাদের অভিযোগ, মিলাররা বড় ধরনের কারসাজি করেছে। এ কারণে তারা শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কয়েকদিনের মধ্যে, ভেতরের কাহিনি কী?
জবাবে সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আপনি কোন মিডিয়া থেকে বলছেন, আগে সেটার পরিচয় জানতে চাচ্ছি।
এরপর ওই সাংবাদিক তার পরিচয় জানালে ফজলুর রহমান বলেন, তেল সম্পর্কে আপনি কতটুকু রিসার্চ করে আমাকে প্রশ্ন করছেন? আর তেলের দাম কত আছে, কোথায় পাননি, কবে থেকে কী হয়েছে, একটু বিস্তারিত ২ মিনিট বললে পরে আমি আপনাকে জবাব দেবো। জবাবে ওই সাংবাদিক বলেন, আমি একজন ভোক্তা।
তখন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমিও ভোক্তা। আপনি যেমন ভোক্তা, আমিও ভোক্তা।
এরপর ওই সাংবাদিক বলেন, ধরুন, দুদিন আগে কিনতে গেলাম কিন্তু তেল নেই। কিন্তু গতকাল বাজারে তেল চলে আসছে। তার মানে তেল গতকাল বাইরের দেশ থেকে আমদানি করে আসেনি, আমাদের দেশেই তেল ছিল। আমি সেটাই বলতে চেয়েছিলাম, তেল এ কয়টা দিন কোথায় ছিল?
উত্তরে ফজলুর রহমান বলেন, সমস্যা যেরকম আপনি প্রশ্ন করবেন তেমনি। সমস্যা সমাধান করার জন্য বিকল্প প্রস্তাব দিতে হবে। আমরা যদি সম্মিলিতভাবে তা না করতে পারি, তাহলে আপনি আবার আমাদের প্রশ্ন করতে পারেন যে, আমরা যা বলেছি, সেটা আপনারা বলেননি বা করেননি। ধন্যবাদ।
এরপর তোপের মুখে পড়েন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সাংবাদিকরা তার এ উত্তরের প্রতিবাদ জানান। পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের নিবৃত্ত করেন।
এরপর আরেকজন সাংবাদিক সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্দেশ করে বলেন, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের মূল ব্যবসায়ী আপনি। সত্য আপনি মানেন আর না মানেন, বাজারে কিন্তু আমরা সয়াবিন তেল পাইনি।
ফজলুর রহমান বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তারপরেও এখানে এসেছি।
তিনি বলেন, এ যে শুক্রবার থেকে আরম্ভ হয়ে গেছে, দাম বাড়ছে, মাল নেই। দোকানদার যদি ১০টি মাল সরিয়ে রাখে, এটার দায় মিল মালিকের না। ৫ তারিখের সিদ্ধান্ত (তেলের দাম বৃদ্ধি) না দিয়ে যদি আজকে সিদ্ধান্ত দিত, তাহলে যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে যেত। তেল কিন্তু আছে। তেল আজকেও আছে। তেলের ক্রাইসিস সেভাবে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমি ওই সেন্সে বলিনি, আপনি আমাদের সাহায্য করুন, তথ্যগত দিক দিয়ে। কীভাবে এটাকে সমন্বয় করে এগিয়ে নিতে পারব। আমি আপনাকে আক্রমণ করে কথা বলিনি।
এসএইচআর/এসকেডি