যাত্রাবাড়ীতে অভিযান, বেশি দামে তেল বিক্রি করায় জরিমানা
ভোজ্যতেল মজুত করে সৃষ্টি করা হয় কৃত্রিম সংকট। ভোক্তাদের জিম্মি করে এখন ওই তেলই অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এমন অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে মাঠে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
সোমবার (৯ মে) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে সরকারি এ সংস্থাটি। তাদের সহযোগিতা করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩ এর সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল ও মো. মাগফুর রহমান।
আব্দুল জব্বার মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহে দেখেছি অনেক ভোক্তা তাদের চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্যতেল কিনতে পারেননি। দোকানিরা তখন বলেছেন, তেল সরবরাহ কম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তারা তেল মজুত করে বিক্রি করছে। বিষয়টি তদারকির জন্য আমরা যাত্রাবাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদেরকে র্যাব-৩ এর সদস্যরা সহযোগিতা করছেন। এখন পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। পাশাপাশি তাদেরকে বোতলের গায়ে লেখা মূল্যে তেল বিক্রি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযান চলছে, শেষ হলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
এদিকে ভোক্তাদের জিম্মি করে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা বেশ কিছু বেসরকারি সংগঠন। তাদের দাবি, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত মূল্য আদায়কারীদের বিরুদ্ধে গতানুগতিক অভিযানের পরিবর্তে প্রচলিত আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারপূর্বক বিচার করা জরুরি।
কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, ঈদুল ফিতরের পর সয়াবিন তেলের মূল্য লিটারে ৩৮ টাকা বাড়ানোর পরও বাজারে তেলের সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকিতে বিভিন্ন ডিলার ও ব্যবসায়ীদের গোপনে মজুত করা তেল উদ্ধার হচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয়, ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে ভোক্তা সাধারণকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তেলের সংকট সৃষ্টির মতো বিভিন্ন সময়ে নানা পণ্য নিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামান্য জরিমানার মতো লঘুদণ্ড দেওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করছে না। বরং ভোক্তাকে জিম্মি করার এই প্রবণতা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এখন খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও ভোজ্যতেল লুকিয়ে রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি এখন সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে এবং এক ধরনের সামাজিকীকরণ হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সরকারের জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণ অসাধ্য হয়ে যাবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে ভোক্তারা পুরোপুরি জিম্মি হয়ে পড়বে। এজন্য এখনই প্রচলিত আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারপূর্বক বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা জরুরি।
এসআই/এসএসএইচ