আমদানি নিয়ন্ত্রণে সব সময় পদক্ষেপ নেওয়া হয় : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণে সবসময় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমদানি নিয়ন্ত্রণ তো করতেই হবে, এটা তো ওপেন নয়। আমদানি করার যে ক্রাইটেরিয়া করেছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কনজ্যুমার প্রোডাক্ট জনসাধারণের জন্য লাগবে সেখানে আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। সেখানে আমরা পাবলিক ও প্রাইভেট উভয় সেক্টর থেকে ইম্পোর্ট করি যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। আর যদি লাক্সারি আইটেম হয় সেগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অবশ্যই করব।
বুধবার (২০ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
১০ ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে, আরও নিয়ন্ত্রণের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক রকম আমদানি আছে। একটা আমদানি হচ্ছে প্রজেক্টের সাথে সরাসরি রিলেটেড, সেটা আমরা এলাউ করি। আমরা যদি কোন আমদানি ক্ষেত্রে কনজ্যুমার আইটেম না হয়, রেভিনিউ বেনিফিশিয়ারি না হয় এবং অন্যান্য খাত যেগুলো দরকার সেগুলো না হয় যেগুলো বাদ দিতে পারি সেসমস্ত ক্ষেত্রে আমরা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের এক্সপোর্ট অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের এক্সপোর্ট বাড়লেও কখনও ইম্পোর্টকে ওভারটেক করতে পারবে না, ইম্পোর্ট বেশি থাকবে। আগে ইম্পোর্ট হয়নি এখন ইম্পোর্ট হচ্ছে। যেগুলোর দাম বেড়েছে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কাজটি করতে হয়।
তিনি বলেন, সব জিনিসের দাম সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাংক মার্চ মাসের প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১ বছরে বিশ্বে গমের মূল্য বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গরুর মাংস ৩৫ শতাংশ, মুরগির মাংস ৫৫ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, চা ১৩ শতাংশ, জিএসপি সার ৬৫ শতাংশ এবং ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে ২৩৪ শতাংশ। আমাদেরও উচ্চ দামে এগুলো কিনতে হয়। সেখানে আমাদের এগুলোকে সমন্বিত প্রয়াস অব্যাহত রেখে কাজটি করতে হয়।
ডিজিটাল কানেকটিভিটি প্রকল্প সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই প্রজেক্টটি আমাদের বিবেচনায় ভালো প্রকল্প। সেখানে অনেক জনবল কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। গণমাধ্যমে এসেছে করোনার মধ্যে দেশে ১ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে ই-কমার্সে। একই খাতে চলতি বছরে আরও ৫ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। আমরা যে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেই সেক্ষেত্রে দুইটি জিনিস বিবেচনা করি। মৌলিক দুইটি এলাকা বিবেচনা করি, রেভিনিউ জেনারেশন ফর গভর্নমেন্ট এবং কর্মসংস্থান। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু সরকারের কথা ভিন্ন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক বছরের যে কাজ সেটার রিফ্লেকশন হবে বাজেটে। সবকিছুর জবাব বাজেটেই পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল কাজ হচ্ছে ব্যাংকগুলো আছে তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। আমাদের দেশের যে সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন ফান্ডগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। মনিটরিং পলিসিতে তারা যা করার দরকার করছেন। সেজন্য আমরা সুন্দরভাবে পার করতে পেরেছি। এখনো বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ব্যাংক যা করবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং আমাদের বাইরের সমস্যাগুলো আছে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এদিকে ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত ১১টি প্রস্তাবের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬২৬ কোটি ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৯ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৮৮ কোটি ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯২ টাকা এবং এক্সিম ব্যাংক অব চায়না ও এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৪ হাজার ১৩৮ কোটি ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৭ টাকা।
আগামী ৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বুধবার (২০ এপ্রিল) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বাজেট তৈরি করছি। সব শ্রেণির মানুষের জন্য আগামী বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। কোনোভাবেই যেন জনগণের ওপর চাপ না বাড়ে সে বিষয়টি নতুন বাজেট প্রণয়নে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
এসআর/এসকেডি