ওজনযন্ত্রের বিএসটিআই ভেরিফিকেশন সনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালে। ওই মেশিনেই ওজন দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছিল মূল্যবান ধাতু ডায়মন্ড ও সোনা।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশান পিংক সিটিতে অভিযান চালিয়ে বিষয়টির প্রমাণ পায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ অপরাধে পিংক সিটির ‘ডায়মন্ড ক্লাসিক’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সতর্ক করা হয়েছে।

অভিযান পরিচালনা করেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল, ফাহমিনা আক্তার ও মো. মাগফুর রহমান। সার্বিক সহযোগিতা করেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা।

পরে আব্দুল জব্বার মন্ডল জানান, নিয়ম অনুযায়ী ওজনযন্ত্র ব্যবহার করতে হলে বিএসটিআইয়ের ভেরিফিকেশন সনদ নিতে হয়। মূল্যবান ধাতু যেমন- সোনা ও ডায়মন্ডের ক্ষেত্রে এটা অবশ্যই নিতে হয়। এসব ওজনযন্ত্রে একটা সময়ে ওজনের হেরফের হয়। কিন্তু আমরা অভিযানে দেখতে পেলাম, পিংক সিটির ডায়মন্ড ক্লাসিক নামের প্রতিষ্ঠানটি যে যন্ত্রের মাধ্যমে ওজন দিয়ে সোনা ও ডায়মন্ড বিক্রি করছে তা ২০১৬ সালে সর্বশেষ ভেরিফিকেশন হয়েছে। বিগত ছয় বছর তারা কোনো মানসনদ ছাড়াই ওজনযন্ত্র ব্যবহার করছে। যা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয়।

আইনে এ অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানাসহ মামলা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা খুব শিগগিরই বিষয়টি সংশোধন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় জরিমানা বা মামলা না করে সাময়িক বন্ধ রাখার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত ওজনযন্ত্রের হালনাগাদ সনদ নেবে তত দ্রুত তারা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারবে। তাদের মাধ্যমে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও আমরা সতর্ক করতে চাই, যেন তারা অবশ্যই ওজনযন্ত্র হালনাগাদ করে ব্যবসা পরিচালনা করে।

এছাড়া পিংক সিটির আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নামিদামি বিদেশি ব্র্যান্ডের ব্যাগ ও জুতা বলে নকল পণ্য বিক্রি করছে। এমন প্রমাণ পাওয়ায় তাদেরও জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান আব্দুল জব্বার মন্ডল।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের ৬১ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরসহ দেশের ৫৮টি জেলায় বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ সময় দেশব্যাপী মোট ৬৪টি বাজার ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান করে ভোক্তা-স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে ১৬২টি প্রতিষ্ঠানকে ১১ লাখ ৫১ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

জনসচেতনতা বাড়াতে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছে লিফলেট, প্যাম্ফলেট বিতরণসহ হ্যান্ডমাইকে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়।

অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, স্বাস্থ্য বিভাগ, কৃষি বিভাগ, মৎস্য বিভাগ, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-সহ সংশ্লিষ্ট শিল্প বণিক সমিতির প্রতিনিধিরা সহযোগিতা করেন।

এসআই/এমএআর/