রাজধানীর আড়তগুলোতে একপিস লেবুর দাম সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ টাকা। ওই লেবু পাইকারি বাজারে হাতবদল হয়ে খুচরা পর্যায়ে ভোক্তার কাছে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। শুধু লেবু নয় ৫০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। আর ১৮০ টাকার তরমুজ দ্বিগুণ বেড়ে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। এভাবেই রমজান মাসে মানুষকে জিম্মি করে তিন থেকে চারগুণ বেশি দাম আদায় করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

যার প্রমাণ মিলেছে গভীর রাত্রে আড়তে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিশেষ অভিযোনে।

বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজরের আড়তে এ বিশেষ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল।


 
অভিযান প্রসঙ্গে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সবজির দাম লাগামহীন বাড়ছে এটার কারণ হিসেবে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন রাস্তায় চাঁদাবাজি হয়। এ কারণেই দাম বাড়ছে। তাদের এ তথ্য সঠিক কি-না তা যাচাই করতে মাঠ পর্যায়ে বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়। তথ্য যাচাইয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশনায় মধ্যরাতে কারওয়ান বাজারের আড়তে তদারকি করেছি। এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্য ট্রাকে বোঝাই করে এনে বিক্রি করছে। রাস্তায় চাঁদা দিতে হয়েছে কি-না জানতে চাইলে একজন চালক জানিয়েছেন ২০ টাকা দিতে হয়েছে। অন্য সব চালক বলেছেন তাদের কোনো চাঁদা দিতে হয়নি।

এরপর আমরা ট্রাক থেকে কত টাকায় সবজি বিক্রি করছে এ তথ্য নিয়েছি। এক বস্তা লেবুর দাম পরে ২৫শ থেকে তিন হাজার টাকা। প্রতি বস্তায় ৭০০ থেকে ৮০০ লেবু থাকে। প্রতি বস্তার ভাড়া প্রায় ৩০০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতিপিস লেবুর দাম পরে তিন থেকে ৪ টাকা। এই লেবু খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হালি বিক্রি করছে। তিন টাকার লেবু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। অর্থাৎ দুই থেকে চার গুণ বেশি দামে লেবু বিক্রি করছে। বিষয়টি তদারকি করতে পাইকারি ও খুচরা বাজারেও অভিযান করা হবে, বলেন তিনি।

অধিদপ্তরের পরিচালক জানান, আজকে অভিযান চলাকালে কয়েকটি অনিয়মের কারণে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছি। পাশাপাশি হ্যান্ডমাইকে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদেরকে সচেতনতামূলক বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি এবং সতর্ক করেছি। তাদের জানানো হয়েছে, যদি কেউ অন্যায়ভাবে পণ্যের দাম বাড়ায় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আড়তে ভালো মানের প্রতি কেজি বেগুনের দাম ৫০ টাকা। যে বেগুন খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৮০ টাকা।  ১০০ তরমুজের দাম নিচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ পিসপ্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। ওই তরমুজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকা। সেই হিসাবে প্রতিপিস তরমুজের দাম পরছে ৩৫০ টাকা। অর্থাৎ দাম বাড়ছে প্রায় দ্বিগুণ।

এসআই/ওএফ