ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবারও ডেকেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

বুধবার তাদের ডেকেছে অধিদফতর। তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বিষয়ে বুধবারের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।

সোমবার (৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আমরা দুইবার অভিযান করেছি। আমরা গত সপ্তাহে একটা শুনানি করেছি। সে শুনানিতে যে বিষয়টা এসেছে, আমরা দেখেছি প্রোডাকশন (সরবরাহ) কমিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে একটা রিপোর্ট দিয়েছি। আজকেও একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী বুধবার তাদের (তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান) আবার ডেকেছি। বুধবারের পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এর আগে গত ৩০ মার্চ দুপুরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যালয়ে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী চার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অনিয়মের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। তবে তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি সংস্থাটি। এজন্য বুধবার তাদের আবার ডাকা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ ভোজ্যতেল নিয়ে মিল পর্যায়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে তিনটি সরবরাহ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি পাঠায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠান ৩টি হলো- এস আলম গ্রুপ, টিকে গ্রুপ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল (রূপচাঁদা ব্র্যান্ড)।

অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, গত ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেকে এস আলমের কারখানা পরিদর্শন করা হয়। ওই সময় তাদের কারখানায় ড্রামের গায়ে পণ্যের নাম, মেয়াদ ও মূল্য উল্লেখ ছিল না। তেল রিফাইনারি ও বোতলজাতকরণ শাখা বন্ধ ছিল। ৫ লিটারের মোড়কে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮৩৫ টাকা লেখা ছিল, যা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। এরপর ২৭ মার্চ আবারও পরিদর্শন করা হয়। দ্বিতীয় বার দেখা যায়, সরবরাহ আদেশ বা এসওতে একক মূল্যের উল্লেখ নেই। নিয়মবহির্ভূতভাবে এসওগুলো কারখানায় আসার আগে হাতবদল হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জে টিকে গ্রুপের কারখানায় পাওয়া অনিয়ম সম্পর্কে চিঠিতে বলা হয়, কোম্পানিটি ফেব্রুয়ারি মাসে ২৭ হাজার ৩৭১ টন পাম তেল বিপণন করলেও মার্চে এসে তা কমে ২১ হাজার ১১৯ টনে নেমে আসে। এদিকে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪ হাজার ৩৮ টন তেল সরবরাহ করা হলেও মার্চ মাসে তা ৮ হাজার ২৬৩ টনে নেমে আসে। 

এসএইচআর/এসকেডি