ফেমাস গ্রুপের ১৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি
ফেমাস গ্রুপের ২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
বুধবার (২ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ ফেমাস গ্রুপের দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৮০ কোটি ২৮ লাখ টাকার গোপনকৃত বিক্রয় হিসাব পাওয়া গেছে। যেখানে তদন্তে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি পাওয়া যায়। ওই টাকা আদায়ে আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়ার জন্য ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়িক গ্রুপটির দুইটির প্রতিষ্ঠান ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড ও ফেমাস আইবারকেম ফ্লেভারস অ্যান্ড ফ্র্যাগনেন্সেস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠান দুটো মূলত খাদ্য সামগ্রীতে ব্যবহৃত কেমিক্যাল (ফ্লেভার) এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কের প্যাকেজিং সামগ্রী উৎপাদন ও সরবরাহ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাজেদুল হক এবং মুনাওয়ার মুরসালীনের গত ২৩ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানের গুলশানের প্রধান কর্পোরেট অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে গোয়েন্দা দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত ঘোষিত বিক্রয় তথ্য গোপন করে মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। অভিযানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে এবং প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে ধারণকৃত তথ্য যাচাই করে সেবা বিক্রি সংক্রান্ত বাণিজ্যিক দলিল জব্দ করা হয়।
তদন্ত অনুসারে, ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ৮৬৯ কোটি ১০ লাখ ৮১ হাজার ৭২২ টাকার পণ্য বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় গাজীপুর ভ্যাট সার্কেল-৫ এ মাসিক রিটার্নে ৮২৭ কোটি ৯০ লাখ ৭১ হাজার ২৪৫ টাকা বিক্রিয় হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৫৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩ হাজার ৫১২ টাকা। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮০ টাকা। যেখানে ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে সুদ ২ কোটি ৪১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩৫ টাকা আসে।
এছাড়া ফেমাস আইবারকেম ফ্লেভারস অ্যান্ড ফ্র্যাগনেন্সেস লিমিটেডের ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ২৬ কোটি ৭৯ লাখ ৫৫ হাজার ৪২১ টাকা। ভ্যাট ফাঁকি ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার ৭০৭ টাকা এবং সুদ প্রযোজ্য ৪৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮১৬ টাকা।
সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠান দুইটির মোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ পাওয়া গেছে ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৭ হাজার ৬৮৭ টাকা। সুদসহ ফাঁকিকৃত ভ্যাটের পরিমাণ ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩৮ টাকা।
আরএম/আইএসএইচ