বাঁশ-কাঠের সেতু পেয়ে খুশি ২ গ্রামের মানুষ
কখনো নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো আবার কখনো খেয়া নৌকায় পারাপার হতো দুই গ্রামের মানুষ। তবে এখন আর তাদের কষ্ট করে পারাপার হতে হবে না। কাঠের পাটাতন ও বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সেতু। এতেই খুশি এলাকাবাসী।
ঘটনা ফরিদপুরের আলগী ইউনিয়নের তালকান্দা এলাকার। এ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদের একটি শাখা। ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের শাখাটি এলাকাবাসীর কাছে তালকান্দা খাল হিসেবে পরিচিত। খালের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে তালকান্দা ও ছোট খারদিয়া গ্রাম অবস্থিত।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, দীর্ঘ দিন তালকান্দা ও ছোট খারদিয়া গ্রামের মানুষ যাতায়াতে বাঁশের সাঁকো কিংবা খেয়া নৌকা ব্যবহার করত। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এই দুটি গ্রামসহ আশপাশের ১৪-১৫টি গ্রামের লোকজন খাল দিয়ে খেয়া পার হয়ে ভাঙ্গা উপজেলা শহরসহ হাট-বাজার, স্কুল-কলেজে যাতায়াত করত। ২০০৫ সালের পর খালের ওপর বাশের সাঁকো তৈরি করে এলাকাবাসী। তবে সেটিও গত বছর ভেঙে যায়। এরপর এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যায়। অবশেষে বাঁশ ও কাঠের সেতু নির্মাণ হওয়ায় এলাকাবাসী খুশি। এখন তারা এলাকায় একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি করছেন।
সরেজমিনে সেতু এলাকায় দেখা যায়, কুমার নদের শাখা খালের পশ্চিম পাশে আলগী ইউনিয়নের চার নং ওয়ার্ডের ছোট খারদিয়া গ্রাম। পূর্ব পাশে ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড তালকান্দা গ্রাম। এই দুই ওয়ার্ডের সংযোগ সড়কে খালের ওপর পাঁচ ফুট প্রস্থ এবং ১৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি ২৬৯টি কাঠের তক্তার পাটাতন ও খুঁটিগুলো বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, খাল পার হয়ে আলগী ইউনিয়নের ছোট খারদিয়া, মানিকদী, নগরমানিকদী, ভরমানিকদী, বালিয়া, সুকনি, বিদ্যানন্দী গ্রামের লোকজন ভাঙ্গা উপজেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিদিন অন্তত সাতশ থেকে আটশ লোক এ খাল পার হয়। এ খাল পার হয়েই পীরেরচর উচ্চ বিদ্যালয়, পীরেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলগী ইউনিয়ন ভূমি অফিসসহ উপজেলা সদরে আসতে হয়।
ছোট খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিটন মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের অধিকাংশ লোকের জমি খালের ওপারে তালকান্দা গ্রামের মাঠে। আমাদের দিনে বেশ কয়েকবার এ খাল পার হতে হয়। এ খাল পার হয়েই বাজার-ঘাট করতে হয়। কাঠের সেতু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি।
ভাঙ্গার পীরেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, সেতু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আগে ২ কিলোমিটার বেশি ঘুরে আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে হতো। এখন সহজে খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারব।
আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম.ম. ছিদ্দিক মিয়া বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করে দিয়েছি। এতে আমার প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। তবে এখানেই শেষ নয়, আমি চেষ্টা করব আগামীতে এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার।
জহির হোসেন/এসপি