গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রাণী মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫ জন থেকে বাড়িয়ে ৮ জন করা হয়েছে। এছাড়া নির্ধারিত ১০ কার্যদিবসেও তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ায় আরও ১০ কার্যদিবস সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে সম্প্রতি জেব্রাগুলোর মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে ২৬ জানুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  

অন্যরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, বন ভবন, ঢাকার বন সংরক্ষক এবং কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের প্রাক্তন চিফ ভেটেরিনারি অফিসার ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ। কয়েকদিন আগে তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় রোগ নির্ণয় ল্যাবে (সিডিআইএল) কর্মরত মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আজম চৌধুরী, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি ল্যাব প্রধান অধ্যাপক মো. নুর আলী হাদী খান এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসটি) অঞ্জন কুমার সরকারকে এ কমিটিতে কো-অপ্ট করা হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ কমিটির সদস্যরা সাফারি পার্কে ঠিকাদারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা/কর্মচারীর বক্তব্য নিয়েছেন। পরে বিকেলে তারা গাজীপুর সার্কিট হাউসে মতবিনিময় করেন। কমিটির সদস্য অঞ্জন কুমার সরকার জানান, আগামী শনিবার তারা আবার তদন্তে পার্কে যাবেন।

তদন্ত কমিটিকে ২৭ জানুয়ারি থেকে ১০ (দশ) কার্য দিবসের মধ্যে জেব্রাগুলির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন, জেব্রাগুলির মৃত্যুর ঘটনায় সাফারী পার্কে কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাফিলতি পরিলক্ষিত হলে তা চিহ্নিতকরণ এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ সংবলিত তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে। পরে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আরও সদস্যকে কো-অপ্ট করা হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ায় বুধবার মন্ত্রণালয়ে ওই তদন্তের জন্য আরও ১০দিন সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে বলেন সদস্য সচিব আব্দুল ওয়াদুদ। 

গত ২জানুয়ারি থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে ৯টি জেব্রা এবং ২৯ তারিখে আরও দুটিসহ মোট ১১টি জেব্রা মারা গেছে সাফারি পার্কে। জেব্রা ছাড়াও সেখানে একটি সিংহী ও বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এ কমিটি এসব প্রাণিমৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে। 

জেব্রাগুলোর মৃত্যুর বিষয় এই কমিটি আগে বলেছে, অতিরিক্ত কাঁচা ঘাস ছাড়াও স্ট্রেপ্টোকক্কাস, ই-কোলাই, স্টোডিয়াম, সালমোনিলা ও পাস্টুরেলা নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এবং নিজেদের মধ্যে মারামারি করে জেব্রাগুলো মারা গেছে। 

এদিকে এ ঘটনায় কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। 

শিহাব খান/এনএফ