সাফারি পার্কের মৃত প্রাণীগুলোর নমুনা পরীক্ষা করবে সিআইডি
গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটিকে সহায়তা করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ ঘটনায় অভিজ্ঞদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি এক্সপার্ট কমিটি গঠন করেছে।
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সাফারি পার্কের তথ্য ও শিক্ষা কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীর মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, দেশে সিআইডির দক্ষ একটি ল্যাব রয়েছে। তাদের নিজস্ব ল্যাবে মৃত প্রাণীর মরদেহের সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তদন্ত কমিটির কাছে জমা দেবে। এ ছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের এক্সপার্ট কমিটি করেছে, যারা আমাদের তদন্ত কমিটিকে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবে।
মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী বলেন, শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক একটি সমৃদ্ধ পার্ক। এখানে বাঘ, জেব্রা, হরিণ, ঘড়িয়ালসহ প্রায় ১৬০০ প্রাণী রয়েছে । পার্কটির আরও উন্নয়নের প্রয়োজন। আমরা এটাকে আরও সৃমদ্ধ করব।
পার্ক পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি এটার যে কাজ বাকি আছে সেগুলো করতে হবে। বর্তমানে একটা প্রকল্প চলমান আছে। সেই প্রকল্পে এটার আরও উন্নয়নমূলক কাজ, রাস্তার সংস্কার ও প্রশস্তকরণসহ অন্যান্য কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
কর্মকর্তাদের গাফিলতি সম্পর্কে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি যাতে সহজভাবে কাজ করতে পারে তাই ইতোমধ্যে আমরা দায়িত্বরত তিনজন কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিয়েছি। তদন্ত কমিটিকে ১০দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মন্ত্রণালয় থেকে কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে এ জন্য কাজ করবে পার্ক কর্তৃপক্ষ।
সাফারি পার্কের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বন ছিল, বনে বাঘ ছিল, সিংহ ছিল। এখন বন উজাড় হয়ে গেছে, বাঘ-হরিণ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বন না থাকলে বাঘ থাকার তো জায়গা নেই। তাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন প্রাণীগুলোকে দেখতে পারে, সে জন্যই আমরা সাফারি পার্ক স্থাপন করেছি।
একটি বাঘ ও একটি সিংহ অসুস্থ থাকার কথা জানানো হলে মন্ত্রী বলেন, প্রাণীকে সুস্থ করে তুলতে যত প্রকারের চিকিৎসা সম্ভব তার সবই করা হবে। পার্কের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় যদি সম্ভব না হয়, তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া, প্রাণীর মৃত্যুর ঘটনাকে অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন সবুজ, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ, সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী ও পার্কের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিম প্রমুখ।
শিহাব খান/আরআই