রংপুরে মৃত্যু আরও ৩, বেড়েছে শনাক্ত
রংপুর বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনজন মারা গেছেন। একই সময়ে ৮৭০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বিভাগে শনাক্তের হার বেড়ে ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে শনিবার ৩৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় ১০১ জন। সে দিন শনাক্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ।
রোববার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারীতে একজন ও দিনাজপুরে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে বিভাগের আট জেলার মধ্যে রংপুরে ১০১, দিনাজপুরে ৫৯, নীলফামারীতে ৪৯, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩১, পঞ্চগড়ে ২৭, গাইবান্ধায় ২৭, লালমনিরহাটে ১৬ ও কুড়িগ্রামে ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৭৬ জন। বর্তমানে বিভাগে করোনা আক্রান্ত ৯৮ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সংকটাপন্ন ১৫ রোগীকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা চলছে। বিভাগজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯১৭ জন।
পরিচালক আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৬ হাজার ২৯২ এবং ৩৩৬ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১৯১-তে।
এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩০৬ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৮ হাজার ৩৯৭, নীলফামারীতে মৃত্যু ৯০ ও শনাক্ত ৫ হাজার ১৫৩, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৪ হাজার ২০৮, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৮৬৭ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৭০ ও আক্রান্ত ৩ হাজার ৭৬ জন।
তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ২৪ হাজার ৪১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬১ হাজার ৪৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৬০ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৫ হাজার ৫৭৩ জন।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোন বলা হয়েছে। এছাড়া ইয়েলো জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা। দিন দিন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ভারতের কোলঘেঁষা এই বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে তা উদ্বেগজনক। তবে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করতে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহ করা অব্যাহত রয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি