বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবির ঘটনায় ২ জেলের মরদেহ উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবে নিখোঁজ দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দুবলার চরের দক্ষিণে জাহাজভাঙ্গা চর এলাকায় দুটি ট্রলারের ভেতর থেকে জেলে মামুন শেখ ও ইসমাইল শেখের মরদেহ উদ্ধার করেন অন্য জেলেরা।
এর আগে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ১৮টি ফিশিং ট্রলার ডু্বে নিখোঁজ হন অন্তত ২৭ জেলে। শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ জেলে ও ট্রলার উদ্ধারে অভিযান শুরু করে বন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও জেলেরা। এ ঘটনায় এখনও অন্তত ২০ জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বিজ্ঞাপন
নিহত মামুন শেখের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় এবং ইসমাইল শেখের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। মামুন শেখ এফবি মা-বাবার দোয়া ট্রলারে এবং ইসমাইল শেখ এফবি জামিলা নামক ট্রলারে ছিলেন। হঠাৎ উল্টে যাওয়ায় মামুন ও ইসমাইল ট্রলারের পাটাতনের মধ্যে ঢুকে যান। পরে আর বের হতে পারেননি।
এছাড়া এখনো কয়েকটি ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। ওইসব ট্রলারেও বেশ কিছু জেলে ছিলেন। তারা কী অবস্থায় আছেন- সে বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জীবিত উদ্ধার হওয়া জেলেরাও নিখোঁজ ট্রলারের বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে পারেননি।
অন্যদিকে শনিবার বিকেলে আবদুল্লাহ, রাজু শেখ, ও ইয়াকুব আলী নামে তিন জেলেকে বঙ্গোপসাগর এলাকা থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার বিএন আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের দুবলা জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেন, শুক্রবার রাতের আকস্মিক ঝড়ে বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা অধিকাংশ জেলেরাই সাঁতরে নিরাপদ স্থানে উঠে যায়। তারপরও বেশ কয়েকজন জেলে নিঁখোজ হন। শনিবার সকাল থেকে জেলে, বন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা নাগাদ এফবি মা-বাবার দোয়া ট্রলার থেকে মামুন (৪০) ও এফবি জামিলা ট্রলার থেকে ইসমাইলের (৩০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জেলেরা নিহতদের মরদেহ তাদের বাড়িতে নিয়ে রওয়ানা দিয়েছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, হঠাৎ করে বৃষ্টি ও ঝড় আঘাত হানে সুন্দরবনের বিভিন্ন চরে। বৃষ্টির ফলে শুকাতে দেওয়া প্রায় দুই কোটি টাকার শুঁটকি নষ্ট হয়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে ১৮টি ট্রলার ডুবে যায়। এসব ট্রলারে থাকা ১৫৪ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তানজীম আহমেদ/আরএআর