ধসে যাওয়া বাঁধ

যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণে ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে  নির্মিত বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে ওই এলাকার প্রায় ১০০ ফুট জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যমুনা নদীর পানির স্রো‌তে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী গ্রামের ওই বাঁধে ধস দেখা দেয়। 

২০১১ সালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বরইতলী গ্রাম থেকে ভূতবাড়ী গ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটার নদীর তীর এলাকায় ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলায় প্রতি বছর যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি বা কমার সময়ে নদী তীরে ভাঙন দেখা দেয়। নদী ভাঙনের ফলে বসতভিটা, কৃষকের ফসলের ক্ষেত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীন হয়। নদীর হাত থেকে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের গ্রামগুলো রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে।  ফলে কয়েক বছর ধরে নদীতে আর ভাঙন দেখা দেয়নি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভান্ডারবাড়ি গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ধস দেখা দেয়। এতে মাত্র দুই ঘণ্টায় তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রায় ১০০ ফুট এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙন রোধে তীর স্লো‌পিং করে তার ওপর জিও চট বিছানো হয়। সেই জিও চটের ওপর পাথর ও সিমেন্টের তৈরি সিসি ব্লক দিয়ে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজ করা হয়। বর্তমানে যমুনার পানি কমে যাওয়ায় নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে বালুচর। যে কারণে পানির স্রোত এসে ধসে যাওয়া স্থানে আঘাত করছিল। একপর্যায়ে তীর সংরক্ষণ এলাকার প্রায় ১০০ ফুট ধসে যায়। যার প্রস্থ প্রায় ৫০ ফুট। এছাড়াও ওই এলাকার আরও প্রায় ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্য এলাকায় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। 

ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, যমুনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের জন্য বাল্কহেড এবং পরিবহনের জন্য অসংখ্য নৌকা নদী তীর দিয়ে যাওয়া-আসা করে। এতে নদীর পানিতে বড় আকারের ঢেউ তৈরি হয়। যা নদী তীরে আঘাত হানছে। এ কারণেই ভান্ডারবাড়ীর চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের বড় একটা অংশ ধসে গেছে। আরও ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, ভান্ডারবাড়ীতে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ধসে যাওয়া স্থান পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে পানি স্থির হওয়ায় ধসের আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবুও ধসে যাওয়া স্থান নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়াও ধস ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

সাখাওয়াত হোসেন জনি/আরএআর