চাকরি ফিরে পাবেন সিনহা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ৭ পুলিশ
দীর্ঘ ১৮ মাস কারাভোগের অনিশ্চিত দিন যাপনের পর মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়া পুলিশের সাত সদস্যের চাকরি ফিরে পেতে এখন আর বাধা নেই। সঙ্গে পাবেন সাময়িক বরখাস্ত হয়ে কারাভোগের ১৮ মাসের বেতন-ভাতাও। তবে, এরজন্য আদালতের রায়ের কপিসহ তাদের সংশ্লিষ্ট মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে আবেদন করতে হবে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা জানান, পুলিশের বিধি মতে এসব সদস্য চাকরি ফিরে পাবেন। পদোন্নতিসহ অন্যান্য সুবিধাও পাবেন প্রয়োজনে।
বিজ্ঞাপন
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী বাপ্পী শর্মা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) মতে খালাস পাওয়া ব্যক্তি চাকরি ফেরত ও বরখাস্ত থাকাকালীন বেতন দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য স্ব-স্ব বিভাগের নির্ধারিত বিধান রয়েছে। খালাস পাওয়া সদস্যরা পুলিশের বিভাগীয় আদালতের মাধ্যমে চাকরিতে ফিরবেন। এটা না হলে পুলিশের এসব সদস্যের শ্রম আদালতসহ আইনের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগও রয়েছে।
এর আগে, সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া ছয় আসামি সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ ছাড়া এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনার পাঁচ দিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত বছরের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর গত বছরের ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। মোট ৬৫ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সাইদুল ফরহাদ/ওএফ