বিধবাকে শিকলে বেঁধে জমি দখল, ভিডিও ভাইরাল
পাবনার আটঘরিয়ায় এক বিধবাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামে। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে ফেসবুকে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে চাঁদভা ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামে একই এলাকার রমিজ উদ্দিনের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে ওই বিধবাকে বেদম মারপিট করে। পরে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার জমির ওপর টিনের ঘর তুলে জমি দখল করে নেয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত কোনো একজন মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। পরে তিনি ওই ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিলে তা ভাইরাল হয়।
ভুক্তভোগী বিধবার অভিযোগ, রমিজ উদ্দিন প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন নিয়ে এসে তাকে মারপিট করে শিকল দিয়ে বেঁধে তার ২০ শতাংশ আবাদি জমি দখল করে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
তার ছেলের অভিযোগ, বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ৯৯৯ ফোন দিলে আটঘরিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত রমিজ উদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নেন।
কয়েকজন প্রতিবেশী অভিযোগ করে বলেন, রমিজ উদ্দিন ঘটনার দিন বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে ওই বিধবার জমি দখল করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রমিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রমিজের স্ত্রী রোজিনা খাতুন বলেন, এই জমি তার স্বামী রমিজ উদ্দিন এবং তার ওয়ারিশদের। ওই নারী তার সৎ শাশুড়ি। তিন বিয়ে করার কারণে তাকে বাড়িতে না রেখে ওই জমিতে ঘর তুলে থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন তিনি আর উঠছেন না। গ্রাম্য সালিসে মাতব্বরা তাকে উঠে যেতে বললেও তিনি উঠে যাননি। তাকে কেউ নির্যাতন করেনি। কিছু মাস্তানের প্ররোচনায় তিনি মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম জমি দখলের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, শিকল দিয়ে বাঁধার যে ঘটনা সেটি সাজানো নাটক।
চাঁদভা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, এক নারীকে শিকল দিয়ে বেঁধে জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে- এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে দেখেছি। আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও এসেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, থানার এসআই আবুল কালামকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। তবে শিকল দিয়ে বাঁধার বিষয়টি সাজানো।
আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই।
রাকিব হাসনাত/আরএআর