উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী সালেহ ও শরীফুল ইসলাম

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় পুকুরে গাড়ি উল্টে পড়ে দুই উপপরিদর্শক (এসআই) নিহত হওয়ার পর ইয়াবাসহ আটক গাড়িচালক পালানোর ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ কমিটি গঠন করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি করে এ কমিটি গঠিত হয়েছে। অপর দুই সদস্য হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার খ-অঞ্চলের অফিসার ইনচার্জ এসএম শাহরিয়ার হাসান ও নারায়ণগঞ্জ ডিএসবি ডিআইও-২ মো. হুমায়ুন কবির খান।

আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান করে সুস্পষ্ট মতামতসহ একটি বস্তুনিষ্ট প্রতিবেদন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের কাছে দাখিলের জন্য কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনার পর পলাতক মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনকে তিন দিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় সোনারগাঁ থানার এসআই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

উল্লেখ্য, সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোল প্লাজায় তল্লাশি চৌকিতে একটি গাড়িকে থামার জন্য সংকেত দেওয়া হয়। সেটি এক কনস্টেবলকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া করে ওই গাড়িটি ধরা হয় এবং ইয়াবাসহ গাড়ির চালক আলমগীর হোসেনকে আটক করা হয়। গাড়িতে ৪২ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।

এরপর আলমগীরকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আনা হয়। এ সময় আলমগীর নিজেই গাড়ি চালান। এসপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে তাকে নিয়ে আবার থানায় যাওয়ার জন্য রওনা দেন এসআই শরীফুল ইসলাম ও কাজী সালেহ এবং এএসআই রফিকুল ইসলাম। তবে তাদের তিনজনের কেউই গাড়ি চালাতে পারতেন না। ফলে তারা আলমগীরকে আবারও গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেন। সোনারগাঁ পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় আসার পর গাড়িটি রাস্তার পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে নেমে পালিয়ে যান আলমগীর। এতে দুই এসআই শরীফুল ইসলাম ও কাজী সালেহ নিহত হন। গুরুতর আহত হন এএসআই রফিকুল।

এসআই শরীফুল ইসলাম ও কাজী সালেহ নিহত হন। তারা দুজন সোনারগাঁ থানায় কর্মরত ছিলেন। শরীফুল ইসলাম গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার চরভাইপাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে। আর কাজী সালেহ ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে।

এ ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রফিকুল ইসলাম আহত হন। তাকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শেখ-ফরিদ/এনএ