কালীগঞ্জে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের নির্যাতনে প্রাণ গেল যুবকের
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের নির্যাতনে আনোয়ারুল ইসলাম (৩০) নামে এক যুবক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসূল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হকের বাড়ির পাশে ঝুপড়ি ঘর থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আদিতমারী উপজেলার নামড়ি ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে মজিবরের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম। তার কাছে টাকা পাওনা ছিল কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য মোজাম্মেল হকের। পাওনা টাকা চাইতে আনোয়ারুলের বাড়িতে যান ইউপি সদস্য, তার ভাই ও ছেলে। টাকা না পেয়ে তারা আনোয়ারুলকে ধরে নিয়ে আসে। তিন দিন আটকে রেখে তার ওপর চলে পৈশাচিক নির্যাতন।
এ সময় তাকে উদ্ধার করতে প্রতিবেশী কুদ্দুসের ছেলে রোকনুজ্জামান এগিয়ে এলে তাকেও আটকে রেখে নির্যাতন করে। আনোয়ারুল চিত্কার-চেঁচামেচি করলে এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক তার বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে দেন।
পরের দিন আত্মীয়-স্বজনরা আটকে রাখার খবর পেয়ে ইউপি সদস্যের বাড়িতে ছুটে যান। কিন্তু ইউপি সদস্য তার পরিবারের কথা না শুনে লাঠি দিয়ে ধাওয়া করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। উপায় না পেয়ে তারা ৯৯৯ ফোন করে। তবে ইউপি সদস্য তার বাড়িতে দুজন আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং এলাকায় দুজন চোর আটক আছেন এমন খবর ছড়িয়ে দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই দিন সন্ধ্যায় পাঁচজনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- জেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের চলবলা ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য মোজাম্মেল হক (৪৬), তার ছোট ভাই মোশারফ হোসেন ভুট্টু (৩০) ও ছেলে সুজন (২৪)। বাকিদের নাম জানা যায়নি।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল জানান, এ ঘটনায় প্রধান আসামি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক ও আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এসপি