করোনার টিকা দিতে মাইকিং করে টাকা নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার জন্য মাইকিং করে টাকা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার (১২ ডিসেম্বর) উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া জনতা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য নেওয়া হয় ১১০ টাকা করে। এতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি ) থেকে উপজেলার প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়। এতে বুধবার উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া জনতা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ২৯০ জন শিক্ষার্থীর টিকা নেওয়ার নির্ধারিত তারিখ ছিল। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ সকাল থেকেই মাইকিং করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১১০ টাকা করে নিয়ে টিকা কেন্দ্রে যেতে বলেন।
মাদারজানি গ্রামের একজন শিক্ষার্থী জানায়, মাইকিং করে জানানো হয় টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য ওই টাকা লাগবে।
কুমুল্লী উত্তরপাড়া গ্রামে যে অটোরিকশায় মাইক লাগিয়ে টাকার কথা বলা হচ্ছিল ওই অটোরিকশা চালক আব্দুর রহিম বলেন, স্কুলের দপ্তরী রাসেল তার গাড়ি ভাড়া করে আশপাশের ৫ গ্রামে করোনার টিকার রেজিষ্ট্রেশনের জন্য ১১০ টাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে হাজির হতে বলেন।
শিক্ষার্থীরা রাধারাণী গার্লস স্কুলে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য টাকাসহ লাইনে দাঁড়ানোর পর শিক্ষকরা টাকা নিতে শুরু করেন। এ সময় সংবাদকর্মীরা হাজির হলে শিক্ষকরা টাকা নেওয়া বন্ধ করে দেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম মিয়া দুপুর ১২টার দিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লেখেন- আমার পিয়ন মাইকিং করার সময় যে খরচের জন্য একশত টাকার কথা প্রচার করেছে তা ভুলবশত। শিক্ষার্থীর জন্য নিজের যাতায়াত খরচ। বিষয়টি কেউ ভুল বুঝে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে তিনি বলেন, স্কুলের দপ্তরী রাসেল মাইকিং করে টাকা চেয়েছেন। তিনি বিষয়টি জানতেন না। ওই দপ্তরীকে প্রয়োজনে সাসপেন্ড করা হবে।
আর দপ্তরী রাসেল বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই তিনি মাইকিং করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীম আল রাজীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, টিকা আনা-নেওয়ার খরচ বহন করছেন স্থানীয় প্রশাসন। সুতরাং টিকা দেওয়ার অজুহাতে কেউ টাকা আদায় করতে পারেননা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. নাজনীন সুলতানা বলেন, টিকা রেজিষ্ট্রেশনের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ পেয়ে তিনি প্রধান শিক্ষককে কড়া ভাষায় সতর্ক করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. পারভেজ মল্লিক বলেন, এ ব্যাপারে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিজিৎ ঘোষ/এনএফ