অস্ত্রোপচারের পর ২০ বছর ধরে পেটে কাঁচি বহন করে চলা বাচেনা খাতুনের চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর সিভিল সার্জন জাওয়াহেরুল ইসলাম। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গাংনীর সেই রাজা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে রোগীর পেটে কাঁচি রাখার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল হলেও সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবারকে, এমন দাবি করে ক্লিনিক মালিক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা বলেন, ওই রোগীর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাচেনা খাতুনকে কাঁচি অস্ত্রোপচারের জন্য চুয়াডাঙ্গার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক বাচেনার অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়াবেটিস থাকায় অস্ত্রোপচার না করে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ডায়াবেটিস কন্ট্রোল হলে অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানান তিনি।

বাচেনা খাতুনের ছেলে ইয়ামিন হোসেন বলেন, রাজা ক্লিনিকের লোকজন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমার মায়ের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়ে আমাদের পছন্দের চিকিৎকের কাছে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসক রাজা। সে মোতাবেক মঙ্গলবার আমার বাবা ও বড় মামা আমার আম্মাকে চুয়াডাঙ্গায় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, সেখানে চিকিৎসক নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে আমার মায়ের শরীরে ডায়াবেটিস আছে। যে কারণে অপারেশন করা হয়নি। সুস্থ হলেই অপারেশন করা হবে।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী বাচেনা খাতুন ২০ বছর আগে পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচার করান গাংনীর রাজা ক্লিনিকে। কিন্তু ২০ বছর ধরে সুস্থ না হওয়ায় অবশেষে রাজশাহীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে করালে পেটে কাঁচির সন্ধান পাওয়া যায়। এটি নিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে।

গত ৩ জানুয়ারি দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন ঢাকা পোস্টে সর্বপ্রথম অসুস্থ বাচেনা খাতুনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়।

আকতারুজ্জামান/এনএ