ট্রলারডুবিতে ৩ মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার কাঁঠালিয়া নদীতে ট্রলারডুবিতে তিন মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা শেখ ফরিদ। পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে থানা পুলিশ থেকে মেয়েদের লাশ গ্রহণের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বাবা শেখ ফরিদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মাদরাসা বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে আমার তিন মেয়ে নানুর সাথে মামাবাড়ি কুমিল্লা তিতাসে বেড়াতে যাচ্ছিল। ট্রলারডুবিতে সবাইকে লাশ হতে হল। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচব। আমাকে আব্বু বলে কে ডাকবে?
বিজ্ঞাপন
কী অপরাধ ছিল আমার? আল্লাহ কেন আমাকে এই শাস্তি দিল জানি না। দুই মেয়ে ঢাকার একটি মাদরাসায় পড়ত। স্বপ্ন ছিল, তারা অনেক বড় আলেম হবে। কিন্তু ট্রলারডুবিতে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
ট্রলারডুবি ঘটনায় মৃতরা হলেন তিতাস উপজেলার রায়পুর গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়ার স্ত্রী জুলেখা আক্তার (৬০), ঢাকার ডেমরা থানার সুকশি গ্রামে শেখ ফরিদের মেয়ে আয়েশা আক্তার (১৩), মরিয়ম আক্তার (১২), তামান্না আক্তার(৯)। ৩ জানুয়ারি তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় তামান্নার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান দুর্ঘটনার শিকার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিহত জুলেখা আক্তারের ছেলে ফারুক মিয়ার কাছে আর্থিক সহযোগিতার টাকা তুলে দেওয়া হয়।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবু আবদুল্লাহ জানান, দুর্ঘটনা স্থলে নদীতে প্রচুর কচুরিপানা ও মাছের ঘেরও ছিল। সেখানে পৌঁছালে ট্রলারের নিচে থাকা পাখা খুলে পড়ে যায়। এ সময় ট্রলারে পানি ঢুকে তলিয়ে যায়।
মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন জানান, ট্রলারটিতে ১৪ জন যাত্রী ছিল। এরমধ্যে একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়রা জীবত উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
অমিত মজুমদার/এমএসআর