চলতি মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার ব্যাপারে প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে আশংকায় রয়েছে খাদ্য বিভাগ।

গত বছরের ৭ নভেম্বর আমন ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ সময় চাল ৪০ টাকা ও ধান ২৭ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে ধান ও চাল উভয়েরই বাজারদর সরকারঘোষিত রেটের চেয়ে অনেক বেশি।

সেজন্য ধান-চাল সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে খাদ্য বিভাগ। মিল মালিকদের লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা থাকায় মালিকরা অনেকেই চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করলেও মুখ থুবড়ে পড়েছে ধান সংগ্রহের কার্যক্রম।

জেলার কৃষকরা বলছে, সরকারঘোষিত রেটের চেয়ে অনেক বেশি দামে ধান কৃষকের উঠান থেকে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন তাহলে লোকসান দিয়ে সরকারি গুদামে ধান দিতে কেন যাব? তাছাড়া সেখানে ধান দিতে গেলে নিজ খরচে পৌঁছে দিতে হবে, ধানের আদ্রতা ঠিক রাখতে হবে, সেইসঙ্গে অফিশিয়াল ঝামেলা আছে।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনের পর থেকে ২৭ ডিসেম্বর ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৮৪০ টন। আর সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৪ হাজার ৩২৩ টন। যা লক্ষ্যমাত্রার ১৩ শতাংশ মাত্র। অপরদিকে চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৬০ টন। লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৯ হাজার টন। ফলে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বিরল উপজেলার কৃষক মতিউর রহমান জানান, সরকারঘোষিত ধানের মূল্য ২৭ টাকা কেজি। অপরদিকে ধান ব্যবসায়ী ও মিলাররা আমার বাড়ির উঠান থেকে ২৮/২৯ টাকা কেজি দরে ধান নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে কোনো ঝামেলাই করতে হচ্ছে না। তাহলে আমি কেন কম দামে ধান দিতে যাব? এর বাইরেও সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে নিজ খরচে পৌঁছে দিতে হবে, ধানের আদ্রতা ঠিক রাখতে হবে, নানান ঝামেলা আছে।
 
দিনাজপুর জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক এসএম সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা চাল ৭২ শতাংশ ও ধান ১৩ শতাংশ সংগ্রহ করেছি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি। সরকারঘোষিত দর আর বাইরের বাজারদর কাছাকাছি হওয়ার পরেও মিল মালিকরা সহযোগিতা করছে। ফলে চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে আমরা সংশয়ের মধ্যে আছি।

ইমরান আলী সোহাগ/দিনাজপুর