নিজের সরকারি অফিসের কক্ষে বসে দালালের মাধ্যমে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার ঘটনায় রাজবাড়ী সদর উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক বাবুল চন্দ্র সরকার ওরফে বাবু সাহেবকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জয়ন্তী রুপা রায় এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন বলে জানা যায়। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বাবুল চন্দ্র সরকার নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র সরকার ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করতে চান না। সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। নামজারি, মিসকেসসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ তার হয়রানির শিকার হন। তাকে ম্যানেজ না করলে মেলে না কোনো সমাধানের নিশ্চয়তা।

এদিকে এই কর্মকর্তার রুমে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের সময় গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই ডিভিওতে দেখা যায়, দুজন বৃদ্ধ নামজারির একটি কাজে তার হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন ভূমি অফিসের এক দালাল। পরে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে নজরে আসে জেলা প্রশাসকের। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অভিযুক্ত বাবুল চন্দ্র সরকারকে কারণ দর্শানোর নেটিশ দেওয়া হয়।

সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, বাবুল চন্দ্র সরকারের বিষয়টি জানার পরপরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছিলাম। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে এই শোকজের জবাব দিতে হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হতে পারে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শোকজের বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত সদর উপজলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক বাবুল চদ্র সরকার বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জয়ন্তী রুপা রায় স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ হাতে পেয়েছি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশটির জবাব দেওয়া হবে। 

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম স্যার কঠিন ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযাগ উঠলে জেলা প্রশাসক সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে শোকজ করেত পারেন। যেহেতু এ ঘটনার ভিডিও রয়েছে এবং বিষয়টি পরিষ্কার। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্যারের এখতিয়ারের মধ্যে তিন কার্যদিবসের মধ্যে শোকজ করার ক্ষমতা রয়েছে। স্যার সেটি প্রয়োগ করেছেন। 

মীর সামসুজ্জামান/আরএআর