নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেননি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।

নাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর সঙ্গে রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে তিনি বৈঠকে উপস্থিত হননি বলে ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

খবর নিয়ে জানা গেছে, দলের গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকে না গিয়ে সোমবার শামীম ওসমান গিয়েছেন তার প্রয়াত বাবা, মা আর ভাইয়ের কবর জিয়ারতে।

সোমবার দুপুরে ধানমন্ডির কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী।

বৈঠকে উপস্থিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা জানিয়েছেন, মূলত নাসিক নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীর জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিতেই সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে ঢাকা বিভাগীয় দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ছিলেন। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য শামীম ওসমান সেখানে আসেননি।

জানা গেছে, ঢাকায় বৈঠক চলাকালে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জেই ছিলেন। তিনি দুপুরের পর মাসদাইর কবরস্থানে যান এবং সেখানে প্রায় ১ ঘণ্টা তার প্রয়াত বাবা, মা, ভাইসহ মৃত স্বজনদের কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন।

এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলের আগেই শামীম ওসমান একটি রিকশায় চড়ে একাই কবরস্থানে আসেন। সেখানে তিনি তার প্রয়াত দাদা ভাষাসৈনিক খান সাহেব ওসমান আলী, প্রয়াত বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ভাষাসৈনিক এ কে এম সামসুজ্জোহা, ভাষাসৈনিক ম নাগিনা জোহা, বড় ভাই প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমানের কবরের সামনে দীর্ঘক্ষণ দোয়া করেছেন। এ সময় তিনি ডুকরে ডুকরে কেঁদেছেন বলেও জানান তারা।

এ ব্যাপারে শামীম ওসমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল জানান, ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আমাদের দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত সব নেতা-কর্মীকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সব নেতা-কর্মীকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এতে কোনো ভেদাভেদ আমি চাই না। আমি চাই, সবাই এক হয়ে কাজ করবে। নৌকাকে জেতাতে হবে। একটাই কথা হচ্ছে, নৌকাকে জেতাতে হবে। হয়তো কারও পছন্দ-অপছন্দ আছে। কিন্তু একজনই তো নমিনেশন পাবে। আমরা একজনকেই নমিনেশন দিয়েছি। সবাইকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।’

রাজু আহমেদ/এনএ/জেএস