আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। দণ্ড মওকুফ না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর উনি যদি ক্ষমা করেন, তবেই বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবেন।

রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়ার সদরের পিটিআই রোডের নিজ বাসায় সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন দাবি প্রসঙ্গে প্রশ্ন রেখে হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম হঠাৎ করে আবিষ্কার করেছেনে বেগম খালেদা জিয়া নাকি দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। মির্জা ফখরুল সাহেবদের লজ্জা হওয়া উচিত। একাত্তর সালে বেগম খালেদা জিয়ার যে কাহিনিগুলো আছে, সেটা এই প্রজন্মের মানুষরা জানে না। সেগুলোকে খুঁচিয়ে জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্যই কি মির্জা ফখরুল এসব কথা বলছেন?

বেগম খালেদা জিয়া একজন অসুস্থ মানুষ। তার এই শারীরিক অসুস্থতার সময় এমন কোনো কথা বলা উচিত না, যেটা নিয়ে তার সম্মানহানি করে সবাই। কিন্তু যদি এই ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে ইতিহাসকে বিকৃত করে বেগম খালেদা জিয়াকে এখন জোর করে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে তো ইতিহাসের এই কথাগুলো অটোমেটিক চলে আসবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য যে আইন থাকার দরকার ছিল, সে আইনটা করা হয়নি। ইতিপূর্বে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারাও কেউ করেনি। তবে আমাদের সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। শিগগিরই একটি আইন করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বর্তমানে সবচেয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি আওয়ামী লীগ সরকার করে আসছে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বৈঠক করে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে, তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। সেই সার্চ কমিটি দ্বারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দেওয়া বা প্রস্তাবিত নামের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। 

এ নির্বাচন গঠন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন গঠনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সব দল তাদের অভিমত ব্যক্ত করবে। বিএনপি তাদের কথা, তাদের অভিমত তাদের, মতামত রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে ব্যক্ত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিটা যৌক্তিক না। কারণ বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে বহুবার বলেছিলেন দেশে পাগল ও শিশু ছাড়া কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তি নেই।

এ সময় কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান আতাউর রহমান আতাসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ কুষ্টিয়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজু আহমেদ/এনএ