বিজয়ের দিনে আত্মত্যাগী শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ করছে গোটা জাতি। দিনটি উদযাপনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে লাখো জনতা। শহীদবেদিতে একের পর এক পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রদ্ধার ফুলে ভরে উঠছে বেদি।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য পাক বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে জীবন দিয়েছেন ৩০ লাখ শহীদ। সম্ভ্রম হারিয়েছেন প্রায় দুই লাখ মা-বোন। আজ তাদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। তাই তো শ্রদ্ধার ফুলে সিক্ত হচ্ছে শহিদবেদি। 

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয়ের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধায় সিক্ত হন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা। পরে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ জনগণ, শ্রমিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা ইব্রাহিম বলেন, শ্রদ্ধার ফুলে বেদি ভরে গেছে। বেদি ভরা শ্রদ্ধার ফুল দেখে বুকটা ভরে যায়। মনে হয় যুদ্ধের আগে আমার কেনো জন্ম হলো না। কেন যুদ্ধে যেতে পারলাম না। আজ আক্ষেপ হয়। শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। তাদের স্যালুট জানাই। তারাই আজ আমাদের স্বাধীনতার বীরপুরুষ। সারা বছরই এমন শ্রদ্ধা জানাতে চাই।

শ্রদ্ধা জানাতে শিশুসন্তান কোলে নিয়ে স্মৃতিসৌধে এসেছেন পোশাক শ্রমিক রবিউল। তিনি বলেন, আমি আমার সন্তানকে নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। বেদিতে শ্রদ্ধার ফুল দেখে শিশু সন্তান প্রশ্ন করে বসেছে এত ফুল কেনো বাবা? আমি তাকে যুদ্ধের সময় আত্মত্যাগী বীরপুরুষদের কথা শোনালাম। আরও উদ্বুদ্ধ হয়ে নতজানু হয়ে শ্রদ্ধা জানায় আমার সন্তান। শহীদবেদি আজ ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। বুক পেতে শ্রদ্ধা গ্রহণ করছেন বাংলার বীরপুরুষরা। আমি গর্বিত আমি বাঙালি। 

উল্লেখ্য, কিছুক্ষণ পরপরই শ্রদ্ধার ফুলে ভরে যাচ্ছে শহীদবেদি। তবে পুষ্পস্তবক অর্পণের সুবিধার্থে এসব ফুল আবার সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বরত গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পরই জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছে সৌধ প্রাঙ্গন। 

মাহিদুল মাহিদ/আরআই