নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন
সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী, রইলেন শুধু তৈমুর
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন (নাসিক) থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন তারা মনোনয়নপত্র জমা দেননি। সেক্ষেত্রে নাসিক নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী (স্বতন্ত্র) হিসেবে মাঠে রইলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার।
এর আগে গত রোববার (১২ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন আকারাম হোসেন খান ও মাজেদুল ইসলাম। এরও এক সপ্তাহ আগে সাখাওয়াত হোসেন নিজে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তাদের দুজনেরই মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বুধবার মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও শাখাওয়াত হোসেন নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়ায় সিটি নির্বাচনে নয়া আমেজ বইতে শুরু করছে। তৈমুর আলম খন্দকার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পরপরই অবশ্য দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে থাকে।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, বিএনপি অনেক বড় একটা দল। জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বিএনপি। এই বিএনপিকে অনেক কৌশল অবলম্বন করে চলতে হয়েছে। গত জাতীয় নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন আমাদের অনেক প্রার্থীকে জেলখানায় থাকতে হয়েছে। অনেক প্রার্থীর বাড়িঘর লুটপাট করা হয়েছে, অনেককে পেটানো হয়েছে। যাদের পেটানো হয়েছে তাদের মামলা পুলিশ নেয়নি। তাদের গায়েবি মোকদ্দমা দিয়ে বাড়িঘর ছাড়া করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপিকে চলতে হয়েছে। কিন্তু বিএনপি কখনও কম্প্রমাইজ করেনি।
তিনি বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের স্বার্থে বিএনপি কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দল পৃথিবীর সব জায়গায় কৌশল অবলম্বন করে। আমরা আমাদের অবস্থানে এগিয়ে যাচ্ছি। সময় মতো আপনারা বুঝবেন আমাদের অবস্থানটা কী। দল জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।
তৈমুর বলেন, আমরা সবাই এক সঙ্গে আছি। আমরা সবাই ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন করছি। এখন পর্যন্ত বিএনপির একমাত্র আমিই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। মহানগরের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন এবং উপজেলার সেক্রেটারি বন্দর থানার প্রেসিডেন্ট সবাই আমার সঙ্গে আছে।
এ সময় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর সবুর খাট সেন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ভাসানী, বিএনপির সিনিয়র নেতা জামাল উদ্দিন কালু, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌস সোহেল মোল্লা, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ, খেলাফত মজলিসের সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও জেলার সভাপতি এ বি এম সিরাজুল মামুন, খেলাফত আন্দোলনের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও জয় বাংলা নাগরিক কমিটির মনোনীত প্রার্থী কামরুল ইসলাম বাবু।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৪ জন, নারী ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯ ও তৃতীয় লিঙ্গের ৪ জন। ভোটগ্রহণের জন্য মোট কেন্দ্র রয়েছে ১৮৭টি এবং এর মধ্যে ভোট কক্ষ ১৩০১টি। এছাড়া অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯৫টি। এবার নতুন ভোটারের অধিকাংশই তরুণ। আগামী বছরের ১৬ জানুয়ারি নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
রাজু আহমেদ/আরএআর