প্রতি কেন্দ্রে ২০০ বইঠা রাখার নির্দেশ নৌকার প্রার্থীর
পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার জয়ের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০ করে নৌকার বইঠা পাঠানো হবে বলে ভোটারদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নৌকার প্রার্থী মো. আবদুল হাই।
অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনী প্রতিটি সভায় ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা এবং নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে কর্মীরা বইঠা হাতে থাকবেন বলে ভোটারদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এতে ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের দালাল বাড়িতে ভোটারদের সঙ্গে এক উঠান বৈঠকের সময় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। সেই হুঁশিয়ারির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মাঝে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভিডিওটি এই প্রতিবেদকের হাতেও এসেছে।
ভিডিওতে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈডাই যদি লই তোগোরে আর খোঁজ কইরা পাইয়া যাইব না। নৌকা পাইয়া যদি ঘুমযাইয়া থাকতাম হেইডা এক জিনিস। তোরা মনে করাইয়া দিছ বৈডার কথা। এখন থেকে নৌকারে জিতানোর লইগা প্রতি কেন্দ্রে ২০০ কইরা বৈডা পাঠানো হবে ইনশাআল্লাহ। সবাই ৫ তারিখ নৌকায় ভোট দিবেন, কোন ঝামেলা হলে কেন্দ্রের বাইরে নৌকার বৈঠা হাতে আমার কর্মীরা থাকব। তাগোরে কইবেন, কাউরে ছাড় দেওয়া হইব না।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ভেদুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি-১ মনির মাস্টার, সহসভাপতি-২ মোশাররফ মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক চুন্নু ডাক্তার, প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হাই বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা নানাভাবে আমার ভোট নষ্ট করার জন্য ভোটারদের কাছে বলে বেড়াচ্ছে। ভোলার অভিভাবক তোফায়েল আহমেদ আমাকে দল থেকে নৌকা দিয়েছেন কিন্তু বিজয়ের জন্য বৈঠা দেননি। তাই তাদের উদ্দেশ্যে ওই দিন মুখ ফসকে এই কথাগুলো বেরিয়ে গেছে। এখানে ভোটারদের উদ্দেশ করে আমি কিছুই বলিনি।’
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মিজানুর রহমান জানান, উঠান বৈঠক কিংবা গণসংযোগে ভোটার ও কর্মী সমর্থকদের মাঝে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো এটা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। নির্বাচনকালীন কোনো প্রার্থী এ রকম বক্তব্য দিতে পারেন না। এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ভোলার সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ভেদুরিয়া চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রর্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আবদুল হাই, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মো. কালিমুল্ল্যহ, এ ছাড়া মো. মোসলেউদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান, মো. মোস্তফা কামাল, মো. হারুনর রশিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইমতিয়াজুর রহমান/এনএ