খেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদারীপুর সদর উপজেলার মধ্য পেয়ারপুর এলাকায় ওয়াহিদ তালুকদার (৩৫) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন কৃষক মারা যান।

এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী। আর দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছেন বলে জানান মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা।

পুলিশ জানায়, তিন দিন আগে র‌্যাকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার মধ্য পেয়ারপুর এলাকার ওয়াহিদু তালুকদারের ভাগিজা রিয়াদ তালুকদারের সঙ্গে একই এলাকার আকবর তালুকদারের ছেলে সাব্বিরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। এর জেরে দুপক্ষের মারামারিও হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিস-মীমাংসার চেষ্টা করে। এরই জেরে সোমবার রাত ১১টার দিকে সাব্বির ও তার লোকজন ওয়াহিদ তালুকদারকে হামলা করে। এ সময় তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা ওয়াহিদকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওয়াহিদ মারা যান।

এদিকে মারা যাওয়ার খবরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পরপরই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে।

নিহত ওয়াহিদের মা সাজেদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। এমন শান্তি দেওয়া হোক, যাতে আগামীতে কেউ মানুষ খুন না করার সাহস না পায়। আমার ছেলে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। তাদের কীভাবে লালন-পালন করব?

নিহতের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার বলেন, আমার বাবাকে সাব্বির, আক্কাবর, মজিবর, সোমরাজ, শাওন, লিয়নরা মিলে পিটিয়ে খুন করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

তবে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। সবাই ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান। তবে পাশের এক গৃহবধূ বলেন, মারা যাওয়ার কথা শুনেই সাব্বিরসহ বাড়ির অন্যরা চলে গেছে। আমরা নিরীহ মানুষ। এখন ভয়ে আছি। কখন আমাদের বাড়িঘরে হামলা হয়, সেই চিন্তায় আছি।

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, নিহতের ঘটনা শোনার পরই আমরা এলাকায় গিয়েছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খুনের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে এখনো নিহতের পরিবার থেকে মামলা করেনি।

নাজমুল মোড়ল/এনএ