পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে নাসিম হোসেন (১৭) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে দুবলিয়া সদরের দুবলিয়া বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে হাজারো নারী-পুরুষ। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারাবাড়িয়া বাজারে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। 

নিহত কলেজছাত্র নাসিম সদর উপজেলার আটঘরিয়াপাড়া গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে। বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানের সমর্থক ছিল সে। সে দুবলিয়া হাজি জসিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এত দিন আমাদের ইউনিয়নে ভোটের খুব শান্ত পরিবেশ ছিল। বর্তমান চেয়ারম্যান নিজের ভরাডুবি দেখে নির্বাচন বানচাল করার জন্য এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। চেয়ারম্যান হয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করাসহ গরিবের চাল চুরি করেছে। পাশাপাশি অবৈধ ব্যবসা করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। 

সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে থাকলেও তিনি সদর উপজেলার চরতারপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে কোটি টাকার বিনিময়ে নৌকা বাগিয়ে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয় দুবলিয়া বাজার। মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন এলাকাবাসী। 

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রোকনুজ্জামান সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় বাজার করতে আসা নাসিম নামে এক কলেজছাত্রর মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছিল। পেছন থেকে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরপরই নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, আগামী ২৬ ডিসেম্বর পাবনা সদরের ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

রাকিব হাসনাত/এসপি