খালেদার চিকিৎসার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করতে পারেন : চুন্নু
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির নেতারা উল্টাপাল্টা প্রলাপ বকছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিএনপি জানে এবং সরকার জানে। এটা আমাদের দলের বিষয় নয়, আমরা জানিও না। তবে আমরা বলতে পারি, মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করতে পারেন। কারণ এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। কিন্তু মেরে ফেলা বা ষড়যন্ত্র আমাদের অভ্যাস নয়। আমাদের সরকারের (এরশাদের শাসনামলে) সময়ে এ ধরনের কাজ আমরা কখনোই করি নাই। এটা বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের বিষয়।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরের দর্শনায় পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টিকে কার্যকর বিরোধী দলে পরিণত করতে তৃণমূল নেতাদের তোলা দাবি প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমাদের কর্মীদের এই দাবি যথাযথ। কারণ মানুষের মধ্যে একটা পারসেপশন আছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই পারসেপশনটা দোষের নয়। কারণ আমরা জোটে থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন করেছি। পৃথিবীর অনেক দেশে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের সিস্টেম রয়েছে। তবে পার্লামেন্টে আমরা সরকারের ভুলত্রুটি ধরে দিচ্ছি। বিরোধীদল হিসেবে সরকারের সমালোচনা করছি।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ মনে করে বিরোধীদল মানে রাস্তায় যাওয়া, ভাঙচুর করা, পার্লামেন্টে হৈচৈ করে বর্জন করা। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অনেক কিছু সংস্কার করেছেন। বিশেষ করে রাজনীতিতে বিরোধী দলের কী ভূমিকা হবে, তার সঠিক পথ তিনি দেখিয়ে গেছেন। অতীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে যা করেছে, আমরা তা করব না। কারণ জাতীয় পার্টি এই সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। দেশে এখনো সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামার পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।
এক প্রশ্নের উত্তরে জাপা মহাসচিব বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে। কারণ দেশের মানুষ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগকে কয়েকবার ক্ষমতা দিয়েছে। তবুও মানুষ শান্তিতে নেই। এই বড় দুই দল দেশে সুশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের জন্য কাজ করতে পারেনি।
ডিজেলের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাতারাতি ডিজেলের দাম ১৫% বৃদ্ধি করা ঠিক হয়নি। দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষের কষ্ট বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামছে না। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। সরকার দুর্নীতি থামাতে ব্যর্থ। অথচ মানুষ দুর্নীতিমুক্ত একটি সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা চায়।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এখন যারা সরকারি দলের নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন, তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা চান না। জোর করে ভোট নয়, এখন নৌকার প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে চান। এভাবে নির্বাচন চললে বিএনপির মতো আগামীতে জাতীয় পার্টিও নির্বাচন বর্জন করবে।
এ সময় বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাপার অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলার সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর