মেয়র জাহাঙ্গীরের পরিণতি হচ্ছে আব্বাসের!
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পরিণতি বরণ করতে যাচ্ছেন রাজশাহীর কাটাখালি পৌর মেয়র আব্বাস আলী। তাকে মেয়র পদ থেকে অপসারণে অনাস্থা এনেছেন পৌরসভার ১২ কাউন্সিলর।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাতে পৌরভবনের সভাকক্ষে বৈঠকে বসেন কাউন্সিলররা। তাতে সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মজিদ। ওই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়। পরে অনাস্থা প্রস্তাবে প্রত্যেকেই স্বাক্ষর করেন। রাতেই তা জেলা প্রশাসক বরাবর জমা দেওয়ার কথা।
বিজ্ঞাপন
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাতে মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে আরএমপির তিন থানায় জমা পড়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি অভিযোগ। একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, অচিরেই মেয়র পদ থেকে অপসারণ হচ্ছেন মেয়র আব্বাস। দ্রুতই তিনি গ্রেফতারও হতে পারেন।
গত সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে মেয়র আব্বাস আলীর কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়। ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপটিতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বানালে ‘পাপ হবে’ এমন কথা বলতে শোনা গেছে মেয়র আব্বাস আলীকে।
এরপর থেকেই উত্তাল রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গন। বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে তার নিজ এলাকায়। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে রাজশাহী নগরীতেও। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে।
রাজনৈতিক উত্তাপের ভেতরেই বুধবার বিকেলে মেয়র আব্বাসকে কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক পদ থেকে অব্যহতি দিয়েছে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ। এখন তিনি জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন। সেই পদও হারাতে পারেন আব্বাস।
এদিকে, কঠিন এই সময়ে একা হয়ে গেছেন মেয়র আব্বাস আলী। গত দুদিন ধরে তাকে দেখা যায়নি প্রকাশ্যে। যাননি পৌরসভাতেও। ‘কাছের মানুষ’ হিসেবে পরিচত রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনও শাস্তি চেয়েছেন মেয়র আব্বাসের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি জানিয়েছেন, আব্বাসের দ্রুত গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে তিনি নগর পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাছাড়া আগামীকাল শুক্রবার বৈঠক করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে জেলা আওয়ামী লীগ।
আব্বাসের পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত স্বীকার করে দুই মেয়াদে ‘নৌকার প্রার্থী’ হওয়ায় তার পাশে ছিলেন বলেও দাবি করেন আয়েন উদ্দিন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে ছিলেন। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গত ১৯ নভেম্বর তাকে সেই পদ থেকে অপসারণ করে আওয়ামী লীগ। একই সাথে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিস্কার করা হয়। সর্বশেষ অর্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরআই