৬৪০০ বস্তা সারসহ সন্ধ্যা নদীতে ট্রলারডুবি
সার বহনকারী একটি ট্রলার সন্ধ্যা নদীতে ডুবে গেছে। এতে ৬৪০০ বস্তা সার ছিল। ট্রলার চালকসহ তিনজন শ্রমিক নদী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ট্রলার ও সার রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার খোদাবকস এলাকার সন্ধ্যা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন কুমার সাহা।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, যদিও আমরা সরকারি লেভেলযুক্ত কোনো বস্তা এখনো দেখিনি। ফলে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে ধারণা করছি ট্রলারটিতে সরকারি সার ছিল। তবে ট্রলার মালিক বা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা না হওয়ায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, বেলা ১১টার দিকে আমরা নদীর পাড় থেকে দেখতে পাই সবুজ রঙ করা একটি ট্রলার ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। বিকেল ৪টার দিকে ট্রলারটি পুরোপুরি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা শ্রমিকরা চেষ্টা করছিলেন ডুবে যাওয়া ঠেকাতে। কিন্তু তারা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন ট্রলার চালক ও সঙ্গে থাকা দুইজন শ্রমিক নদী সাঁতরে তীরে উঠে আসেন।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী কাওছার বালী বলেন, ট্রলারটি যেখানে ডুবে আছে সেখানে একটি বাঁশ পুতে দিয়েছে যেন অন্য কোনো নৌ-যান দুর্ঘটনার শিকার না হন। আমি জেনেছি ট্রলারটির তলা ফেটে পানি ঢুকে ডুবে যায়।
বানারীপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ৫০ কেজি ওজনের ৬৪০০ বস্তা সার ছিল ট্রলারটিতে। যশোর জেলার নোয়াপাড়া অভয়নগর থেকে বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গুদামে সারগুলো নেওয়া হচ্ছিল। পানিতে ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারগুলো গুলে নষ্ট হয়ে গেছে। আর ট্রলারটিও পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়ে গেছে নদীতে।
এ কর্মকর্তা বলেন, সন্ধ্যায় মালিকপক্ষ থানায় এসেছেন। তারা জানিয়েছেন ট্রলারে যারা ছিল তারা অক্ষতভাবেই নদী তীরে উঠতে পেরেছেন। আগামীকাল ট্রলার উত্তোলনের জন্য কাজ শুরু করবেন। নদীর পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া সারের মূল্য কত তা সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন উল্লেখ করে ওসি বলেন, সরকারি গুদামে ব্যক্তি মালিকানার সার রাখা হয় না। ট্রলার মালিক আমার কাছে জানিয়েছেন ট্রলারে থাকা সার সরকারি।
বানারীপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র মনির হোসেন বলেন, ডুবে যাওয়া ট্রলারটির অবস্থান শনাক্ত করে রাখা হয়েছে।
উজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদ বলেন, শিকারপুর গুদামে কোনো সার আসছিল এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। এমনকী ট্রলারডুবিতে সরকারি সার ডুবে গেছে এমন তথ্যও আমার জানা নেই। আমার মনে হয় এই সার ব্যক্তি বা বেসরকারি কোনো আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের। উপজেলা গুদামে সাধারণত এত বেশি বস্তা সার বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তারপরও খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হচ্ছি। ওদিকে ট্রলার মালিকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। জানা গেছে, ট্রলার মালিকের বাড়ি বাগেরহাট জেলায়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস