তাদের প্রজন্মকে তকমা লাগিয়ে দিল তারা ‘চোরাকারবারি’
‘চোরাচালান প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, আমি এর প্রশংসা করি। কিন্তু একটা মানুষ কতটা অমানবিক হলে একটা বাড়িকে ‘চোরাকারবারির বাড়ি’ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন! এই বাড়ির মানুষ এখন না যেতে পারে স্কুলে, না যেতে পারে কলেজে। এখন মানুষ তাদের চোরাকারবারি বলে ডাকে।’
হবিগঞ্জের মাধবপুর ও চুনারুঘাটের বিভিন্ন স্থানে ‘চোরাকারবারির বাড়ি’ ও ‘মাদক কারবারির বাড়ি’ লেখা সংবলিত সাইনবোর্ড দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুরে জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আহমদাবাদ ইউনিয়নের গুইবিল বিওপি এলাকায় ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
৫ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ওই লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘সমাজপতিরা বললে আমি ঘৃণা করি কিন্তু একটি ডিসিপ্লিন বাহিনী বিজিবির লোকজন এভাবে মানুষকে সমাজচ্যুত করে দেয়! তিনি বলেন, ধরে নিলাম এ বাড়ির একজন অপরাধ করে কিন্তু এ সাইনবোর্ড দিয়ে তো তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে তকমা লাগিয়ে দিল, তারা চোরাকারবারি।
চোরাকারবারির বাড়িতে যদি চোরাকারবারির সাইনবোর্ড লাগানো যায়, তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বাড়ি ও দুর্নীতিবাজদের বাড়িতে সাইনবোর্ড লাগান না কেন?
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক এই প্রসিকিউটর বলেন, এই সাইনবোর্ডের কারণে এলাকা ও বাড়ির কলঙ্ক হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু অস্ত্র দিয়ে সমাজ ঠিক হবে না, বিবেক দিয়ে সমাজ ঠিক করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের সোমবার থেকে জেলার মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন বাড়িতে বিজিবি ‘চোরাকারবারির বাড়ি’ ও ‘মাদককারবারির বাড়ি’ আখ্যা দিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
মোহাম্মদ নুর উদ্দিন/এনএ/জেএস