শেরপুরের গারো পাহাড়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতির মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রথমবারের মতো চারজনের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে বন বিভাগ।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০২১ সালের এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৭২টি হাতি মারা গেছে। বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ে হাতি মারা গেলেও এর মূল কারণ এখন পর্যন্ত উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। 

অন্যদিকে ভারত সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতি ও নালিতাবাড়ীতে হাতি চলাচলের স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ বসতভিটা। এছাড়াও ব্যাপকভাবে বন উজাড় করায় আশ্রয় ও খাদ্যের সন্ধানে হাতি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এরপর শুরু হয়েছে হাতি ও মানুষের লড়াই। একদিকে হাতি যেমন পাহাড়িদের মারছে তেমনি মানুষও নির্বিচারে হাতি হত্যা করছে। 

সর্বশেষ গত ১১ নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলায় মালাকুচা এলাকায় জিআই তারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ায় মৃত্যু হয় হাতির। এ ঘটনায় তদন্তসহ মৃত হাতিটির সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে বন বিভাগ। এতে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতির মৃত্যু হয়েছে। 

এ ব্যাপারে বন বিভাগের শ্রীবরদী রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, অবৈধভাবে বন দখল করে ফসলি জমি তৈরি করছে পাহাড়িরা। এছাড়াও বনের গাছ কেটে বিক্রি করে বন ধ্বংসও করছে তারা। খাবারের সন্ধানে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে। হাতি ঠেকাতে পাহাড়িরা বসতভিটা ও সবজি খেতের চারপাশে জিআই তার দিয়ে ঘিরে তাতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়। সেই তারে জড়িয়ে মারা যায় বন্য হাতি। এ ঘটনায় এবারই প্রথম শ্রীবরদী থানায় মামলা করা হয়েছে। যেখানে বন আইনে মালাকুচা এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আমেজ উদ্দিন ও সমেজ উদ্দিন, মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আশরাফুল ও হাতেম আলীর ছেলে শাহজালালকে আসামি করা হয়েছে। 

শ্রীবরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

জাহিদুল খান সৌরভ/আরএআর