তাহিরপুরে কয়েক গ্রামে নির্ঘুম রাত বাসিন্দাদের
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের বড়গোপটিলায় ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা তিনটি বুনো হাতির উৎপাতে সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তবাসীর উদ্বেগেরে কথা জেনে পুলিশ ও বিজিবি সীমান্তে মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে হাতি না মারার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। রাতে আগুনের কুণ্ডলী জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে কয়েকটি গ্রামের মানুষ।
গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) গভীর রাতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় থেকে তিনটি বুনো হাতি নেমে আসে। এরপর থেকে এরা স্থানীয় কৃষকের ফসল নষ্ট করতে থাকে। বুধবার (১৭ নভেম্বর) তাহিরপুর থানা পুলিশ ও বিজিবি এসে হাতিকে আক্রমণ না করতে মাইকে প্রচারণা চালিয়ে গেছেন বলে জানান এলাকাবাসী।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাতিগুলো সীমান্তের গ্রাম কড়ইগড়া, মাহরাম, বড়গোপটিলাসহ কয়েকটি গ্রামের আমন ধান, কলাগাছ, অন্যান্য গাছসহ কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি করছে। হাতি তিনটি বর্তমানে বড়গোপটিলার ওপরের দক্ষিণে মাহরাম টিলা জঙ্গলে আছে। এলাকার বাসিন্দারা পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের পাশের গ্রামে বা আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যারা বাড়িতে অবস্থান করছেন, তারা রাতে বাড়ির সামনে আগুন জ্বালিয়ে জেগে ছিলেন। এতে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান এলাকাবাসী।
মাহরাম টিলার বাসিন্দা হেলিম মিয়া জানান, আমি মঙ্গলবার রাত থেকেই আতঙ্কে আছি। আমার বাড়ির কাছেই জঙ্গলে তিনটি হাতি অবস্থান করছে। গাছপালা বাঁশ ও ধানক্ষেত নষ্ট করে দিচ্ছে। কোন সময় মেজাজ বিগড়ে লোকালয়ে এসে উৎপাত করে হাতি, এই চিন্তায় কয়েকটি পরিবার বৃদ্ধ ও শিশুদের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। বুধবার তাহিরপুর থানা পুলিশ ও বিজিবি এসে হাতিকে আক্রমণ না করতে মাইকে প্রচারণা চালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
ইউপি সদস্য সুষমা জাম্বিল বলেন, তিনটি বিশালকায় বুনো হাতির কারণে সীমান্তের কয়েকটি গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে আছে। তারা বাড়িঘরে রাতে আগুন জ্বালিয়ে বসবাস করছে। পুলিশ ও বিজিবি এসে নিরাপদে থাকার কথা জানিয়ে হাতিকে আক্রমণ না করতে জনগণকে বলে গেছে।
তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ সরদার বলেন, তিনটি বুনো হাতির কারণে সীমান্তবাসীর উদ্বেগের কথা জেনে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ রাতে বসতবাড়ির সামনে ‘আগুন থেরাপি’ অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে। শুনেছি বসতবাড়ির সামনে আগুনের কুণ্ডলী থাকলে হাতি ভয় পেয়ে চলে যায়।
তিনি বলেন, বন্য প্রাণীকে যাতে কোনো মানুষ না মারে, সে জন্য স্থানীয় মসজিদে আমরা মাইকিং করিয়েছি। হাতিকে মারলে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ